সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

মেয়ের জন্য নিজের চাকরি ছেড়েছিলেন বাবা, UPSC পা’শ করে তা’ক লাগালেন অর্পিতা

ফের আরো একবার হলো বাংলার জয়জয়কার। এবার ইউপিএসসিতে জিও সাইন্স ২০২২ সালের সর্বভারতীয় পরীক্ষায় ৩৬ তম ব্যাংক করে সকলকে চমকে দিল বাঁকুড়ার অর্পিতা সিংহ। বাঁকুড়া শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে সাংবাদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূতেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা অর্পিতা। গ্রামে বাবা-মা দিদি জেঠু জেঠিমা বৃদ্ধা ঠাকুমাকে নিয়ে থাকেন অর্পিতা।

কিন্তু অর্পিতার এই জার্নি নেহাতি শহর ছিল না। ছোটবেলা থেকেই আয়রন ম্যান এর অন্ধ ভক্ত ছিলেন তিনি যদিও সিনেমার জন্য কখনো পড়াশোনার ক্ষতি করার কথা ও চিন্তাভাবনা করেননি এই মেধাবী ছাত্রী। বাঁকুড়ার চাপাতোড়া সরস্বতী শিশু মন্দির থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে বাকি সেন্দরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেছিলেন তিনি।

বাঁকুড়া শহরের মিশন গার্লস থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি কিন্তু ২০১৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মাত্র ছয় মাস আগেই তিনি মাকে হারেন। এই স্বজন হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে এগিয়ে চলেছিলেন তিনি। স্বনির্ভরতা হওয়ার লক্ষ্যে কলকাতা যোগমায়া দেবী কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক নিয়ে ভর্তি হন তিনি।

আরো খবর: রাখে হরি মা’রে কে! ভূমিকম্পের ১২ দিন পর ধ্বং’স’স্তূ’প থেকে উ’দ্ধা’র ব্যক্তি, কিভাবে বেঁচেছিলেন এতদিন?

পরবর্তী সময়ে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির থেকে এমএসসি পাস করেন এবং সেখান থেকেই ইউপিএসসি- এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। ২০২১ সালে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পেলেও ভেঙে পড়েন তিনি এরপর ২০২২ সালে জিও বিজ্ঞান বিষয়ে সাফল্য অর্জন করেছিলেন তিনি। এরপর জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াতে উচ্চপদে যোগ দিতে চলেছেন অর্পিতা।

অর্পিতার গ্রামের বাড়ির পড়ার টেবিলে পাওয়া গেছে একটি আয়রন ম্যানের ছবি হাতে আঁকা। নিজের সাফল্য নিয়ে এই মেধাবী ছাত্রী বলেন, আইরন ম্যান নিজের পরিশ্রমের ফল পেয়েছেন। আমি এইভাবে পরিশ্রম করে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি নিজেকে। পরিশ্রম করলে এক না একদিন ফল ঠিক পাওয়া যায়।

এদিকে মেয়ের জন্য জীবনে একাধিকবার চাকরি ছেড়েছেন বাবা অনুপ সিংহ। বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদে চাকরি ও ছেড়ে দিয়েছেন অবলীলায় শুধুমাত্র মেয়ের জন্য। অর্পিতা যাতে তৈরি হয় সেজন্য গ্রামের বাড়িতে বিনামূল্যে ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানোও শুরু করেছিলেন তিনি। অর্পিতার এখন বসবাস বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম সেই ভূতেস্বরে।

গ্রামের বাড়ি থেকেই এখনো পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করলেও যে সফল পাওয়া যায় তা প্রমাণ করেছেন তিনি। তার এই সাফল্যে খুশি গোটা পরিবার। আগামী দিনে গ্রামের আরো মানুষ অর্পিতাকে দেখে অনুপ্রাণিত হবে বলেন মনে করছেন তারা।