আশি থেকে নব্বই এর দশকে বহু বাংলা সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন অভিনেতা বিপ্লব চ্যাটার্জী। তাঁর অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘প্রতিদ্বন্দী’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। শুধু অভিনেতাই নন, ২০০৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থীও হয়েছিলেন আলিপুর আসন থেকে। বরাবরই স্পষ্ট কথার মানুষ হিসেবে আমরা তাঁকে চিনি। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি উপহার দিয়েছেন একের পর এক সুপারহিট সিনেমা। ইদানিং নানা কারণে এই বর্ষীয়ান অভিনেতার নাম সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে। একটা সময় ছিল যখন টিভির পর্দায় বাংলা সিনেমার নায়কদের নানা ধরণের সমস্যায় ফেলতেন এই অভিনেতা।
তাই সেইসময় তার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা চালাতেন বাংলা সিনেমার নায়করা। সেই সময় নামি পরিচালক তথা দুর্দান্ত স্ক্রিপ্ট রাইটার অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত বেশ কিছু সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ে নজর কাড়েন বিপ্লব চ্যাটার্জি। সেই সময় অঞ্জন চৌধুরী লিখতেও ভালোবাসতেন। তার হাতে লেখা সংলাপ ব্যাপক জনপ্রিয়তাও পেত।তার লেখা সংলাপ যখন রঞ্জিত মল্লিকের গলায় শোনা যেত তখন সিনেমা হল ফেটে পড়ত করতালিতে। অঞ্জন চৌধুরী তাঁর প্রথম সিনেমা ‘শত্রু’ দিয়েই বাংলা সিনেমার ইতিহাসে নজির সৃষ্টি করেছিলেন। শুধু তাই নয়, একটা সময় তো সম্পূর্ণ বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে নিজের কাঁধে টেনে নিয়েছিলেন এই পরিচালক।
তাছাড়া অনেক পরিচালক যেমন বাবলু সমাদ্দার,হরনাথ চক্রবর্তী, প্রমূখকে নিজের হাতে তৈরি করে দিয়েছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত ১৯৯৭ সালের একটি সিনেমা মুক্তি পায়, নাম ‘লোফার’। এই সিনেমার পরিচালক ছিলেন বাবলু সমাদ্দার এবং কাহিনীকার ছিলেন অঞ্জন চৌধুরী। সিনেমাটিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন লোকেশ ঘোষ। আর খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বিপ্লব চ্যাটার্জী। এছাড়া রঞ্জিত মল্লিক, চুমকি চৌধুরী, প্রমুখ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ে ছিলেন ।
আরো পড়ুন: ইনি কে? মহিলা চরিত্রে নওয়াজউদ্দিনকে চেনাই মু’স্কি’ল, দেখুন ভিডিও
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই সিনেমার একটি বিশেষ দৃশ্য থেকে জানা গিয়েছে, এই সিনেমার শুটিং চলাকালীন বিপ্লব চ্যাটার্জির মুখে চা ছুঁড়ে মেরেছিলেন অঞ্জন চৌধুরী। কিন্তু কেন তা জানেন কি? চলুন তবে সে গল্পই জানা যাক আজকের প্রতিবেদনে। আসলে সবটাই ছিল সিনেমার দৃশ্যের খাতিরে। এই সিনেমায় একটি দৃশ্য ছিল যেখানে দেখা যাবে নায়ক লোকেশ ঘোষ চা নিয়ে ছুঁড়ে মারবে বিপ্লব চ্যাটার্জির মুখে। কিন্তু বারো তেরো বার টেক হয়ে যাওয়ার পরেও কিছুতে সেই শট ওকে হচ্ছিল না।
অর্থাৎ চা-টা কিছুতেই বিপ্লব চ্যাটার্জীর মুখে পড়ছিল না। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই, চা আদতে ঠান্ডা-ই ছিল। সবাই যখন বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছিলেন তখনই সিনেমার মতোই একটা দুধ সাদা গাড়িতে শুটিং সেটে এসে পৌঁছান অঞ্জন চৌধুরী। শট কিছুতেই ওকে হচ্ছে না জানতে পেরে তিনি নিজেই হাতে চায়ের গ্লাস তুলে নিয়ে একেবারে সোজা বিপ্লব চ্যাটার্জির মুখে চা ছুঁড়ে মারেন, আর একেবারে ওয়ান টেকেই শট একদম ওকে হয়ে যায়।
