সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

মুরগি না হলেও খেতে পারবেন মুরগির মাং’স! মাছ না হলেও পাবেন মাছের স্বা’দ

আজকাল শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে অধিকাংশ মানুষই নিরামিষ খাবার খান। ইচ্ছা থাকলেও মাছ-মাংস খেতে পারেন না। তবুও লোভ কি আর ছাড়া যায় বলুনতো! আজকাল আমেরিকা, ইজরায়েল, সিঙ্গাপুরের মতো দেশে এমন অনেক খাবার তৈরি হচ্ছে, যা অবিকল মাছ-মাংসের মতো খেতে হলেও সেগুলো আসলে মাছ-মাংস নয়। অর্থাৎ আসল মুরগির মাংস বা মাছ নয়।

কখনও বিভিন্ন গাছ থেকে, কখনও মুরগি বা মাছের দেহের কোষ থেকে, কখনও বা থ্রিডি প্রিন্ট করে এই আমিষ খাবারগুলি বানানো হয়। অথচ পুষ্টিগুণ একইরকম থাকে। কি অবাক লাগছে তো! ইজরায়েলের একটি সংস্থার নাম ‘রিডিফাইন মিট’। সেখানে মুরগি, গরু, ভেড়া প্রভৃতির মাংস বানানো হয়। সেখানে বিভিন্ন ধরনের স্টেকও পাওয়া যায়।

কিন্তু সবথেকে অবাক কান্ড যা তা হল এই ধরণের মাংসগুলি সব থ্রিডি প্রিন্ট করে বানানো হয়। তবে এই থ্রিডি প্রিন্টে কোনো কালি ব্যবহার করা হয় না। বরং এখানে গাছ থেকে পাওয়া প্রোটিন জাতীয় উপাদান ব্যবহার করা হয়। এই প্রসঙ্গে এই সংস্থার সিইও এশার বেন শিট্রিট জানান, “এই মাংসের স্বাদ একদম আসল মাংসের মতোই।

আরো পড়ুন: 3 Idiots-এর ফানি চ’রি’ত্র চতুর কো’থা’য় চ’লে গেলেন? এখন কি করছেন তিনি?

এর পুষ্টিগত উপাদানও এক। এমনকি এই মাংসগুলি একেবারে কোলেস্টেরলমুক্ত, তাই এগুলো স্বাস্থ্যের পক্ষেও খুব উপযোগী। এগুলো খেয়ে কেউ বুঝতেই পারেন না যে, এগুলি আসল মাংস নয়।” আমেরিকার ‘ইট জাস্ট’ নামের একটি সংস্থা রয়েছে, যেখানে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন থেকে ডিম এবং মাংস জাতীয় খাবার তৈরি করা হয়।

এই সংস্থার অ্যাম্বাসাডর কাইমানা চি-র বক্তব্য, ২০২০ সালে সিঙ্গাপুর সরকার তাঁদের বানানো মাংসকে পুষ্টিগত দিক দিয়ে যথাযথ বলে উল্লেখ করেছে।” এ ছাড়া আমেরিকাতে বহু জায়গায় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন উপাদান থেকে ‘চিকেন নাগেটস্’ তৈরি করা হয়, যা ওখানকার একটি অতি জনপ্রিয় খাবার। এই মাংসগুলি গবেষণাগারে মুরগির দেহকোষ প্রক্রিয়াকরণ করে বানানো হয়।

অন্যদিকে ‘১৮৮০’-ই পৃথিবীর প্রথম কোনও রেস্তরাঁ, যেখানে কাঁচা মাংস থেকে নয়, বরং গবেষণাগারে বানানো মাংস খাওয়ানো হয়। রেস্তোরাঁর কর্মীরা জানিয়েছেন, এই রেস্তোরাঁয় খেতে আসা কেউই এখনও পর্যন্ত খাবার নিয়ে কোনও অভিযোগ জানাননি।

স্যামন মাছ প্রোটিন ও ভিটামিনের মূল উৎস। তবে আজকাল এই মাছও গবেষণাগারে তৈরি হচ্ছে।গাছের প্রোটিন নিয়ে ল্যাবরেটরিতে ‘সেল কালচার’-এর মাধ্যমে স্যামন মাছের ফিলে তৈরি করা হয়। ইজরায়েলের ‘প্ল্যান্টিশ’ নামক একটি সংস্থা রয়েছে যেখানে এই পদ্ধতিতে মাছ তৈরি করা হয়।

এই সংস্থার সিইও ওফেক রন বলেন, এই প্রচেষ্টার ফলে মাছ উৎপাদন করা যাচ্ছে বলে এখন সমুদ্র থেকে মাছ ধরার পরিমাণ কমে এসেছে। উপাদানগত বৈশিষ্ট্য ও স্বাদের দিক থেকে আসল মাছের সঙ্গে এই মাছের অনেক মিল রয়েছে। তাই এই মাছ খেতে কোনো অসুবিধা হয় না।

গাছ ছাড়াও মুরগির পালকের মধ্যেও প্রোটিন দিয়ে ল্যাবরেটরিতে প্রক্রিয়াকরণ করে মাংস তৈরি করা হয়। আর এহেন প্রক্রিয়াকরণের কথা জানিয়েছেন তাইল্যান্ডের ‘সোরায়ুট মেডিক্যাল ক্লিনিক’-এর এক গবেষক।

সারা ইউরোপ জুড়ে ২৩ লক্ষ টন ওজনের মুরগির পালক বর্জ্য হিসাবে ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া পৃথিবীর ৩০ শতাংশ এই বর্জ্য এশিয়া মহাদেশ থেকেই আসে। আর এক্ষেত্রে ‘সোরায়ুট’ সংস্থার এহেন প্রক্রিয়াকরণের কারণে বিশ্বে বর্জ্য পদার্থের পরিমাণও অনেক কমছে।

আরো পড়ুন: 3 Idiots-এর ফানি চ’রি’ত্র চতুর কো’থা’য় চ’লে গেলেন? এখন কি করছেন তিনি?

সিঙ্গাপুরের ‘শিয়ক মিটস্’ নামক সংস্থাটি সামুদ্রিক মাছ প্রক্রিয়াকরণ করে বানানো হয়। এই সংস্থার এক চিকিৎসক সন্ধ্যা শ্রীরামের কথায়, কুচো চিংড়ি, গলদা চিংড়ি, কাঁকড়া প্রভৃতির দেহ থেকে কোষ সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরির মধ্যেই আস্ত চিংড়ি বা কাঁকড়ার উৎপাদন করা হয়।

অন্যদিকে ‘বি-আইও’ নামক এক ইজরায়েলি সংস্থা মৌমাছির অনুপস্থিতিতে মধু উৎপাদন করছে। সেখানকার গবেষকদের বক্তব্য, তাঁরা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে মধু তৈরি করেন এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ মধু উৎপন্ন হয়। সবথেকে বড় কথা, সারা বছর ধরেই এই মধুর উৎপাদন হয়। আর এই মধু এক বছরের থেকেও কম বয়সি বাচ্চারা খেতে পারেন।

এছাড়া ২০১৯ সালে স্থাপিত ‘রিমিল্ক’ নামে একটি ইজরায়েলি সংস্থা গরুর প্রয়োজন ছাড়াই গরুর দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য উৎপাদন করছে। এটি বিশ্বের প্রথম সংস্থা যেখানে এই অসাধ্য সাধন করা হচ্ছে। এখানকার গবেষণাগারে দুধে উপস্থিত প্রোটিন ইস্টের সঙ্গে মিশিয়ে দুধ উৎপাদন করা হয়।