টোকিও অলিম্পিক্সে ভারতের প্রথম ফেন্সার হিসাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন চাদালাভাদা আনন্ধা সুন্ধারারামান ভবানী দেবী। এই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে প্রথম ভারতীয় ফেন্সার হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।
অলিম্পিক্সে প্রথম ম্যাচে তিউনিসিয়ার প্রতিযোগীকে ১৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিলেন ভবানী। প্রথম ভারতীয় হিসেবে অলিম্পিক্সে ফেন্সিংয়ে কোনও ম্যাচ জেতার নজির গড়ে তোলেন তিনি।”
দেশের মানুষ হয়তো এখনো ‘ফেন্সার’ কথাটি সঙ্গে তেমন ভাবে পরিচিতই নন, তবে দেশের মেয়ে ভবানী দেবী আসমুদ্রহিমাচলকে ফেন্সিংয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন। ২৭ বছরের এই মেয়েটিই ভারতীয় যুবক যুবতীদের কাছে এই খেলাকে নতুন ভাবে উপস্থাপিত করলেন।
তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের এক নিতান্তই সাধারণ পরিবারের মেয়েটি কখনো ভাবতে পারেননি যে তিনিও একদিন টোকিও অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তাকে সেই সুযোগ দিয়েছে ফেন্সিং। যদিও এই সুযোগ পাওয়ার জন্য তাকে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। অভাবের সংসারে ফেন্সার হওয়ার স্বপ্ন দেখা যতটা সহজ, সেই স্বপ্ন পূরণ করাটা তত সহজ নয়। তা প্রতি পদে পদে বুঝেছেন ভবানী।
তবুও মেয়ের স্বপ্নপূরণের উদ্দেশ্যে কোন রকম খামতি রাখেননি বাবা-মা। ফেন্সার হওয়ার জন্য যে প্রশিক্ষণ নিতে হয় তার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। মেরে স্বপ্ন পূরণের জন্য দশ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তারা। তবে সেই ঋণ পরিশোধ করার মত অবস্থা ছিল না তাদের। এমনকি উপযুক্ত প্রশিক্ষকও পাচ্ছিলেন না ভবানী। তবে একবার রিপিট টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে তিনি একজন প্রশিক্ষকের নজরে পড়ে যান। তিনি তাঁকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আজ এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন।
এরপর এই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। অনুর্ধ্ব ১৭-এর জাতীয় প্রতিযোগিতায় সোনার পদক জিতে নেন তিনি। ধীরে ধীরে বাবা মায়ের ঋণ শোধ করেন তিনি। তারপর একসময় অলিম্পিকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগও পেয়ে যান ভবানী। যদিও দ্বিতীয় রাউন্ডে গিয়েই তার যুদ্ধজয়ের যাত্রা থেমে যায়। তবে তিনি হাল ছাড়েননি। ভবিষ্যতে তার নজরে রয়েছে প্যারিস অলিম্পিক। যার জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করছেন ভবানী।