মাঝে মধ্যেই নানান নৃশংস ঘটনার খবর উঠে আসে খবরের পাতায়। কখনও কোনও মানুষকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় তো আবার কখনও কোনো অবলা প্রাণীকে। এক হাতিকে বেশ কিছু বছর আগে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। সেই ঘটনাটি এতোটাই নৃশংস যে সেই কাহিনী শুনলে রীতিমতো গা শিউড়ে উঠবে আপনার।
আজকের প্রতিবেদনটি যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেটি ঘটেছিল ১৯১৬ সালের আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যে। সেখানে এক হাতিকে নির্মমভাবে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। প্রায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষ এই ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এমন অবলা হাতিটিকে কেন এমন শাস্তি দেওয়া হল? এই ঘটনা ইতিহাসের পাতার এক অত্যন্ত বিরল ও নিন্দনীয় অধ্যায় বলেই পরিচিত। জানা যায়, সেই সময় ওই রাজ্যে চার্লি স্পার্ক নামের এক ব্যক্তি ছিলেন যার স্পার্ক ওয়ার্ল্ড ফেমাস শো নামের একটি সার্কাস ছিল। ওই সার্কাসে নানান প্রাণীদের মধ্যে ছিল এক এশিয়ান হাতি, যার নাম ছিল মেরি।
হঠাৎই একদিন মেরির মাহুত কাজ ছেড়ে চলে যায়। তাঁর পরিবর্তে আসে নতুন মাহুত। কিন্তু সেই নতুন মাহুতের সঙ্গে মেরির সেভাবে বোঝাপড়া একেবারেই ছিল না। একদিন সার্কাসের প্রচারের জন্য ওই রাজ্যে একটি কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। এতে মেরিও অংশ নিয়েছিল। সেই সময় মেরির নতুন মাহুত দেখে যে মেরি কিছু খাচ্ছিল। সেই নতুন মাহুত তাকে অনেকবার বাধা দেওয়া সত্ত্বেও মেরি তা শোনে না।
আর এর ফলে সেই মাহুত বর্শা দিয়ে মেরির কানের পেছনে আঘাত করে। তখনই মেরি ভীষণ রেগে গিয়ে মাহুতকে পদপিষ্ট করে মেরে ফেলে। এই ঘটনায় রাজ্যের বাসিন্দারা খুব ভয় পেয়ে যান। তারা স্লোগান দিতে থাকেন যাতে ওই হাতিকে মেরে ফেলা হয়। সেই সময় নানান পত্রপত্রিকাতেও এই ঘটনা প্রকাশিত হয়।
তখন চার্লি স্পার্কের কাছে গিয়ে অনেকেই মেরির মৃত্যুদণ্ডের দাবী জানায়। এই কারণে বাধ্য হয়েই মেরিকে শাস্তিস্বরূপ প্রাণদণ্ডের সিদ্ধান্ত নেন চার্লি। ব্যবস্থা করা হয় ১০০ টন্ন ওজনের একটি ক্রেনের। ১৯১৬ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর সেই ক্রেন দিয়েই ফাঁসিতে ঝোলানো হয় মেরিকে।