আমাদের দেশে রয়েছে অনেক মন্দির। তবে জানেন কি এমন ৫টি মন্দির আমাদের দেশে আছে, যেখানে পুরুষদের প্রবেশের কোনো অধিকার নেই! আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের জানাতে চলেছি সেই সব মন্দির সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য।
১) আসাম (গৌহাটি)-র কামাখ্যা মন্দির : ভারতের একটি তন্ত্র সাধনার পীঠ হল কামরূপ কামাখ্যা। এটি ৫১ শক্তিপিঠের একটি। দেবী সতীর অকালমৃত্যুশোক সহ্য করতে না পেরে মহাদেব ত্রিলোক জুড়ে তান্ডব নৃত্য শুরু করেছিলেন। তখন ভগবান বিষ্ণু তিন লোক রক্ষা করার ভার নিয়ে সুদর্শন চক্রের সাহায্যে দেবী সতীর দেহ ৫১টি টুকরোতে ভাগ করে দেন। আর সেই দেহাংশ মর্ত্যের নানা জায়গায় পড়ে এক একটি শক্তি পিঠের সৃষ্টি হয়।
কামরূপ কামাখ্যায় দেবী সতীর যোনি পড়েছিল। প্রতি বছর আষাঢ় মাসে অম্বুবাচীর সময়ে এই মন্দিরে কোনো পুরুষ ভক্ত বা পুরুষ পুজারী প্রবেশ করার অনুমতি পান না। কারণ মনে করা হয়, বছরের এই সময়ে দেবী ঋতুমতী হন এবং সেজন্যই তাঁর পুজো বন্ধ থাকে। কেবলমাত্র মহিলা পূজারী মন্দিরে প্রবেশ করে দেবীর সেবা করেন। তবে মন্দিরের বাইরে এই সময়ে অম্বুবাচী উপলক্ষে মেলা বসে এবং তাতে নারীপুরুষ সকলেই আসেন।
আরো পড়ুন: ৩০০ কেজি ওজনের বি’রা’ট মাছ ধ’রা পড়লো এই দেশের নদীতে
২) পুষ্করের ব্রহ্মা মন্দির : ভগবান ব্রহ্মা অধিষ্ঠিত এই মন্দির অবস্থিত রাজস্থানের পুষ্করে। তবে এই মন্দিরে বিবাহিত পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ। কারণ বিশ্বাস করা হয়, ভগবান ব্রহ্মা একবার পুষ্কর হ্রদে স্ত্রী দেবী সরস্বতীর সঙ্গে একটি যজ্ঞ করবেন বলে মনস্থির করেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রীয়ের দেরি দেখে তিনি দেবী গায়ত্রীর সাথে বিবাহ সেড়ে যজ্ঞ সম্পন্ন করেন।
পরে দেবী সরস্বতী এসে বুঝতে পারেন যে তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আর সেই মুহূর্তে তিনি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হন। সেই সময় তিনি সমগ্র বিবাহিত মর্ত্যবাসী পুরুষদের অভিশাপ দিয়ে বলেন যে কোনো বিবাহিত পুরুষ এই মন্দিরে প্রবেশ করলে তাঁদের সাংসারিক জীবনের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য নষ্ট হয়ে যাবে।
৩) কন্যাকুমারীর ভগবতী দেবীর মন্দির: এটি মা ভগবতী দেবীর মন্দির। কথিত আছে যে ভগবান শিবকে স্বামী রূপে পাওয়ার জন্য মা ভগবতী একবার তপস্যার জন্য এখানে এসেছিলেন। ভগবতী মা-এর অপর নাম সন্নাস দেবী। তাই একমাত্র সন্নাস পুরুষরাই মন্দিরের প্রবেশ দ্বার থেকে দেবীর দর্শন করতে পারেন। বিবাহিত পুরুষদের এই মন্দিরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এই মন্দিরে কেবলমাত্র মহিলারাই পুজো করার অনুমতি পান।
৪) কেরলের চোককুলথুকাবু মন্দির : কেরলে অধিষ্ঠিত দেবী ভগবতীর মন্দির এটি।বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই মন্দিরে পুরুষদের প্রবেশাধিকার থাকে না। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসের এই মন্দিরে প্রথম শুক্রবার নারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে মন্দিরে কোনো পুরুষ ভক্ত প্রবেশ করেন না এবং নারীদের দেবী হিসেবে পুজো করা হয়। এই পুজোয় এই মন্দিরের একটি অদ্ভুত নিয়ম অনুসারে মন্দিরের সমস্ত পুরুষ পূজারী দশ দিন উপবাসরত মহিলা ভক্তদের পা ধুইয়ে দেন। এই আচারটির নাম ধনু আচার।
৫) যোধপুরে দেবী সন্তোষীর মন্দির : এই মন্দিরে পুরুষদের পুজো করার অনুমতি কখনও ছিল না। এমনকি এই মন্দিরে শুক্রবার পুরুষদরে প্রবেশ নিষেধ। বাকী দিনগুলোতেও পুরুষরা মন্দিরের দরজা দিয়েই দেবীর দর্শন করতে পারেন।