বয়স শুধুই একটা সংখ্যা মাত্র এটা আমরা বলে থাকলেও অনেকেই বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার জন্য মনের ইচ্ছে গুলো অপূর্ণই রেখে দেন কিন্তু সকলে নয়। অনেকেই বয়স কে তুচ্ছ করে নিজের অপূর্ণ ইচ্ছে গুলো পূরণ করেছে। আজ প্রতিবেদনে এমন এক মানুষের কথাই বলবো যিনি ৭০ বছর বয়সে এসে টপার হয়ে তাঁর পড়াশোনা তিনি কমপ্লিট করেন। এই মানুষটি হলেন নারায়ণ ভাট।
কর্নাটকের সিভিল ইঞ্জিয়ারিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় তিনি রাজ্যের ‘টপার’ হয়েছেন। ৯৪.৮৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। । ২ নভেম্বর তিনি যোগ দেন RN Shetty Polytechnic College-এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানে তাঁকে টপার হওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছে ‘গোল্ড মেডেল’। ৭০ বছরের এই প্রবীণ মেধাবী সফল ছাত্রের হাতে পদক তুলে দেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী অশ্বত্থ নারায়ণ। ওই কলেজের অধ্যক্ষ নিত্যানন্দ কিন্নি বলেন, “ইউনিফর্ম পরে নারায়ণ কলেজে আসতেন।
শুধু তাই নয়, কোনও ক্লাস আজ পর্যন্ত কামাই করেননি তিনি। তাঁর উপস্থিতির হার ১০০ শতাংশ। নায়ায়ণের টপ করা এবং তাঁর সফল হওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত।” ১৯৭০ সালে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা পাশ করেছিলেন নারায়ণ ভাট। এরপর তিনি কাজ করেছেন গুজরাট, কর্নাটকে। মেকানিক্য়াল এবং সিভিল দুই বিভাগেই কাজ করেছেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়াং বিভাগে তাঁর বিশেষ দক্ষতাও রয়েছে। কিন্তু, তিনি চাননি এখানেই থেমে যেতে। কারণ জানার কখনো শেষ হয়না।
আরো পড়ুন: আপনার জীবনের উপর থে’কে বাস্তুদো’ষ কা’টা’তে কি কি টো’ট’কা করবেন জেনে নিন
পড়াশোনার প্রতি অদম্য আগ্রহ ছিল তাঁর। ২০১৯ সালে RNS Polytechnic College Under-এ নাম নথিভুক্ত করেন তিনি। বিশেষ একটি কোটায় তাঁর ভর্তি হয়। এরপর নতুন করে শুরু হয় তাঁর লড়াই। নারায়ণ ভাট একশো শতাংশ অ্যাটেনডেন্স নিয়ে পাশ আউট করেন তিনি। প্রতিটি সেমিস্টারে কলেজের টপার হয়েছেন তিনি।
তার এই সাফল্য নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, “তিনি ডিপ্লোমা করেছিলেন। কিন্তু, গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট না থাকায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে একটি সইয়ের জন্য তাঁকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হত। আর সেই কারণে তিনি ফের একবার পড়াশোনার জগতে ফেরার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করেছিলেন এবং পড়ার জগতে ফিরে আসেন তিনি।
অবশেষে স্নাতক হয়েছেন এই প্রবীণ। তার পরিবার নিয়ে তিনি বলেন তার দুই মা। এখন বড় মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার এবং ছোট মেয়ে সায়েন্টিস্ট। দু’জনেই বিদেশে থাকেন। নারায়ণ জানান, তিনি দুই মেয়েকেই তাঁর কলেজে নতুন করে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলেছিলেন। তারা দু’জনেই তাতে রাজি হয়েছিলেন এবং বাবার এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন তাঁরা বলেও জানান নারায়ণ ভাট।