১৯৭৭ সালের ১৩ই আগস্ট আমেরিকায় ঘটে খুবই মর্মান্তিক এক ঘটনা। যা ওই দেশে বিষাদের চাওয়া ফেলে দিয়েছিল।
আমেরিকার ইভান্সভিল বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়েছিল ‘দ্য ইউনিভার্সিটি অব ইভান্সভিল’-এর বাস্কেটবল দল। গন্তব্য টেনেসি। কিন্তু তাদের টেনেসি যাওয়া হয়নি। তাঁর আগেই ঘটে এক অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা।
বিমানটি উড়ান শুরু করার কিছু ক্ষণ পরেই একটি পাহাড়ের কাছে ভেঙে পড়ে সেই বিমান। বিমানে থাকা ২৯ জনের প্রত্যেকেই নিহত হন ওই দুর্ঘটনায়। তদন্তে জানা গিয়েছিল, যান্ত্রিক গোলযোগের কারণেই মাঝ আকাশে ভেঙে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ানা ফ্লাইট ২১৬ বিমানটি। ঘটনা ঘটার পরেই সবার আগে সেখানে পৌঁছোয় আমেরিকা পুলিশের সাংবাদিক প্যাট্রিক ওয়াথেন সেখানে পৌঁছে তিনি দেখেন, বিমানের সবাই পুড়ে প্রায় ছাই হয়ে গিয়েছে।
কাউকেই বলতে গেলে চেনা যাচ্ছে না। তারপরেই তিনি দেখতে পান বাস্কেটবলের ব্যাগ। তা দেখেই তিনি বুঝতে পারেন ইভান্সভিলের প্রিয় বাস্কেটবল দল ছিল ওই বিমানে। অনেক কষ্ট করে তাদেরকে শনাক্ত করা হয়। তারপরে তাদের মৃত দেহ গুলো পাঠিয়ে দেওয়া হয় যে যার বাড়িতে, সেখানেই তাদের সমাধিস্থ করা হয়। মাইক ডাফ এবং কেভিন কিংস্টনকে সমাধিস্থ করা হয় তাঁরা যেখানে খেলার প্রশিক্ষণ নিতেন সেখানে।
আরো পড়ুন: বি’শ্বে’র স’র্বো’চ্চ রে’ল সে’তু’র ত’ক’মা পে’তে চ’লে’ছে ভারতে’র এ’ই’ সে’তু
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পশ্চিম ইন্ডিয়ানার স্কুলে মোট আড়াই হাজার ছাত্র-ছাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় ছিল বাস্কেটবল দলের ওই ক’জনই। ৭০ এর দশকের ‘ দ্য পার্পল এস’। পুরো শহরকে যেন চুম্বক দিয়ে আটকে রেখেছিল এই দল।
তাঁদের মৃত্যুর এই খবর পাওয়া মাত্রই পুরো শহরে নেমে পড়েছিলেন শোকের ছায়া। তবে এই ঘটনার শেষ এখানেই নয়, সেই দলের মধ্যে এক খেলোয়াড় পায়ের চোটের কারণে সেই বিমানে সেদিন ছিলেন না।
তিনি বাড়িতে ছিলেন। পরে যখন তিনি জানতে পারেন যে তাঁর দলের তাঁর বন্ধুদের এই অবস্থা হয়েছে তিনি অসম্ভব ভেঙে পড়েন ডেভিড ফুর নামের ওই যুবক। এই ঘটনার পর থেকে মনমরা থাকতেন ডেভিড। কারণ সে-ই ছিল পার্পল এস বাস্কেটবল দলের একমাত্র জীবিত সদস্য। তবে নিয়তি হয়তো অন্য কিছুই লিখেছিলো তাঁকে নিয়েও।
এই ঘটনার ঠিক দু সপ্তাহ পরেই একটা গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায় পার্পল এস বাস্কেটবল দলের শেষ জীবিত সদস্য ডেভিড। এই দুর্ঘটনায় তাঁর সাথে মারা যায় তার ছোট ভাইও। পর পর ঘটা এই ঘটনা দুটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ছিল। তাই সেই নিহত বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের স্মরণ করে একটা স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে ইভান্সভিল বিশ্ববিদ্যালয়।
এই স্মৃতিসৌধের দেওয়া হয় ‘উইপিং বাস্কেটবল’। এই স্মৃতিসৌধতে নিহত সমস্ত খেলোয়াড়দের নাম খোদাই করা হয়েছে। ডেভিডের নামও আছে সেখানে। প্রতি বিশেষ অনুষ্ঠানে সেই স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে সন্মান জানানো হয় বলে জানা গেছে।