সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

আজ বিপত্তারিণী পুজো, জানুন এই ব্রতর খুঁটিনাটি

হিন্দু ধর্মের পূজিত দেবদেবীদের মধ্যে অন্যতম হলেন মা বিপত্তারিণী। শাস্ত্র মতে, দুর্গার ১০৮টি অবতারের মধ্যে অন্যতম হলেন দেবী সঙ্কটনাশিনী। তাঁর একটি রূপ হলেন মা বিপত্তারিণী। হিন্দু শাস্ত্রে এই দেবীর পুজোর অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। প্রচলিত বিশ্বাস মা বিপত্তারিণী সমস্ত রকমের বাধা, বিপত্তি ও বিপদ থেকে সন্তান এবং পরিবারকে রক্ষা করেন।

তাই এই পুজো করা হয়। শাস্ত্রজ্ঞদের মতে, একবার এই ব্রত শুরু করলে তিন, পাঁচ অথবা ন’বছর পালন করতে হয়। প্রতি বছর আষাঢ় মাসে রথযাত্রা থেকে উল্টোরথের মধ্যে যে মঙ্গল ও শনিবার পড়ে, তাতেই এই ব্রত পালিত হয়।

অর্থাৎ আষাঢ় মাসের শুক্লা তৃতীয় থেকে নবমী তিথির মধ্যে শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে এই ব্রত পালিত হয়। চলতি বছরে রথযাত্রা থেকে উল্টোরথের মধ্যে ২ জুলাই (১৭ আষাঢ়) শনিবার ও ৫ জুলাই (২০ আষাঢ়) মঙ্গলবার বিপত্তারিণী পুজোর দিন রয়েছে।

আরো পড়ুন: ডাক্তাররা বলেছিলেন আয়ু মা’ত্র কয়েক মাস! ক্যা’ন্সা’রে’র নতুন ওষুধে সে’রে উঠলেন রোগী

অনেক জায়গায় আবার এই পুজো চার দিন ধরেও পালিত হয়। প্রথম দিন দেবীর আরাধনা হয়। সেদিন মহিলারা দণ্ডী কাটে। তারপরের দুই রাত ধরে বাংলা লোকগীতি, ভজন ও কীর্তন চলার পর চতুর্থ দিন হয় দেবীর বিসর্জন।

পুরাণে দেবীর অপর নাম কৌষিকী। বিপত্তারিণীর উৎপত্তি নিয়ে এক উল্লেখযোগ্য মত রয়েছে। ভগবান শিবের অর্ধাঙ্গিনী দেবী পার্বতীর কোষিকা থেকে দেবী বিপত্তারিণীর উৎপত্তি হয়েছিল বলে দেবীকে কৌষিকী বলা হয়।

মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে, শুম্ভ ও নিশুম্ভ অসুরের হাতে পরাজয়ের পর দেবতারা হিমালয়ে মহাদেবীর আরাধনা শুরু করছিলেন। আর সেই আরাধনার ফলস্বরূপ দেবী পার্বতীর শরীর থেকে আবির্ভূত হন দেবী বিপত্তারিণী।

পুরাণ অনুযায়ী, দেবর্ষি নারদকে মহাদেব বলেছিলেন যে বিপত্তারিণী ব্রত পালন করলে নারীকে বৈধব্য যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় না। এছাড়া মামলা, মোকদ্দমা, বিরহ যন্ত্রণা, অর্থসংকট থেকে নিস্তার পাওয়া যায়।

সাবধানে ও সমস্ত নিয়ম মেনে এই পুজো করা উচিত। এই ব্রত পালনের বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে।

বিপত্তারিণী পুজোর আগের দিন ও পুজোর দিন আমিষ খেতে নেই।

পুজোর দিন চাল ও গম দিয়ে তৈরি কোনো খাদ্য বস্তু খাওয়া উচিত নয়।

পুজো চলাকালীন সময়ে পরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে কথা বলবেন না, অন্যথায় দেবী অসন্তুষ্ট হন।

১৩ সংখ্যার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এই পুজোয়। এদিন ১৩ গিঁট বিশিষ্ট লাল সুতো স্বামী ও সন্তানের কল্যাণার্থে তাদের হাতে বেঁধে দেন মহিলারা। এই ১৩ গিঁট বিশিষ্ট লাল সুতোকে বলা হয় বরাদ বা রাক্ষ সুতো।

এই সুতোয় বাঁধা থাকে ১৩টি দূর্বা। নিয়ম মতো পুজোর দিন মা বিপত্তারিণীকে ১৩ রকমের ফুল, ফল, মিষ্টি, পান, সুপুরি, নারকেল অর্পণ করা হয়। আর পুজোর শেষে প্রসাদ হিসেবে ১৩টি লুচি ও ১৩ রকমের ফল খাওয়ারও নিয়ম রয়েছে। পুজোর শেষে দেবী বিপত্তারিণীর ব্রতকথা শুনতে হয়।