বিশ্বের প্রথম মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, যিনি এই সম্পূর্ণ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নকশা তৈরি করেছিলেন, তিনি হলেন বিশ্বকর্মা। তাকে দেব শিল্পী বলা হয়। উন্নত ভবিষ্যৎ, নিরাপদ কাজের পরিস্থিতি এবং নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজে নিজে কাজের ক্ষেত্রে সাফল্য লাভের উদ্দেশ্যে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে অনেকে দেব শিল্পীর আরাধনা করে থাকেন। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তি তিথিতে বিশ্বকর্মার পুজো হয়। হিন্দু ধর্মে বাকি সব দেব দেবীর পূজার দিন ধার্য করা হয় চন্দ্রের গতির উপর নির্ভর করে। একমাত্র বিশ্বকর্মা পূজার দিন ধার্য হয় সূর্যের গতির উপর নির্ভর করে।
তাই প্রতিবছরের মতো এই বছরেও বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ১৭ই সেপ্টেম্বর। সর্বদর্শী এবং সর্বজ্ঞ বিশ্বকর্মা দেবতাদের প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। কৃষ্ণের পবিত্র দ্বারকাধাম তিনিই তৈরি করেছিলেন। পুরীর বিখ্যাত জগন্নাথ মূর্তিও নাকি তারই নির্মাণ। রামায়ণে বর্ণিত লঙ্কা নগরী, পাণ্ডবদের মায়া সভা, ব্রহ্মার পুষ্পক রথ, এসবেরই নির্মাতা হলেন বিশ্বকর্মা।
এছাড়াও দেবতাদের বাহন, দেবপুরী এবং বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিবের ত্রিশূল, কুবেরের অস্ত্র, ইন্দ্রের বজ্র, কার্তিকের শক্তি সহ দেবতাদের জন্য বহু কল্পিত অস্ত্রের স্রষ্টাও নাকি বিশ্বকর্মা। তাকে স্বর্গীয় ছুতোরও বলা হয়। ঠিক এই কারণেই, কারাখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, দোকান এবং যন্ত্রপাতি আছে এমন সব স্থানেই বিশ্বকর্মার আরাধনা করা হয়।
বিশ্বকর্মা পুজোর দিন কোনো রকম কাজ করা নিষিদ্ধ। তাই এদিন কারিগররা তাদের সমস্ত যন্ত্রপাতি দেবতার চরণে অর্পণ করে রাখেন। ব্যবহার করেন না। কারখানা কিংবা দোকান নয়, বহু বাড়িতেও বিশ্বকর্মার আরাধনা হয়। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা বহুদিনের।