বর্তমান ব্যস্ততার যুগে মানুষ ভীষণভাবে যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়ছেন। বাড়ির খুঁটিনাটি কাজ করার জন্য তারা হয় অন্যের উপর নির্ভর করছে নতুবা যন্ত্রের উপর নির্ভর করছেন। বাড়ির কাজ এবং বাইরের কাজের একসঙ্গে সামাল দিয়ে উঠতে পারেন না, তারা কার্যত পরিচারিকার শরণাপন্ন হন। অতএব পরিচারিকার সেই সকল কাজে দক্ষ হওয়াটা ভীষণভাবে প্রয়োজনীয়। এই চিন্তা ভাবনা থেকেই কার্যত রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে পরিচারিকাদের বিশেষ ট্রেনিংয়ের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
অত্যাধুনিক এই প্রজন্মে যন্ত্র অনেক কাজ করে দিতে সক্ষম। এই যেমন কাপড় কাচা, ঘর মোছার মতোকাজ এখন আর হাতে ধরে করতে হয় না। তার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট ওয়াশিং মেশিন, ঘর মোছার অত্যাধুনিক যন্ত্র। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পরিচারিকারা এসমস্ত যন্ত্র চালাতে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত নন। যার ফলে তাদের সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তাই শ্রম দপ্তরের তরফ থেকে এবার পরিচারিকাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই প্রশিক্ষণ মারফত রাজ্যজুড়ে গৃহপরিচারিকাদের গৃহকর্মে নিপুন করে তোলা হবে। সম্প্রতি শ্রমদপ্তরের তরফ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর-সোনারপুর পুরসভায় জয় হিন্দ প্রেক্ষাগৃহে পরিচারিকাদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান মুখোপাধ্যায় এদিন এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে একটি রাজ্যে শুরু করা হয়েছে এই ব্যবস্থাপনা।
এদিনের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন শ্রম দপ্তরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। এই প্রশিক্ষণ শিবিরে ১০০ জন গৃহ পরিচারিকা যোগ দিয়েছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন। গৃহপরিচারিকাদের সুবিধার্থে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি জেলায় এই ধরনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিন দিনের এই প্রশিক্ষণে রোজ ১২ ঘণ্টার ক্লাস হবে। সেখানে ওয়াশিং মেশিন থেকে শুরু করে মিক্সার গ্রাইন্ডার এবং রান্না ঘরের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির কাজ শেখানো হবে। এছাড়াও তাদের ব্যাংকের প্রাথমিক কাজকর্ম, প্রাথমিক চিকিৎসা, আদবকায়দা, শিষ্টাচার শেখানো হবে। কোর্স শেষে দেওয়া হবে একটি সার্টিফিকেট এবং সরকারের তরফ থেকে ২৫০ টাকা ভাতা দেওয়া হবে।