সামনেই দুর্গাপূজা। আর দুর্গাপূজা মানেই চারিদিক মাতোয়ারা হয়ে ওঠে শিউলি ফুলের গন্ধে। সংস্কৃতে শিউলির একাধিক নাম আছে, যেমন- শেফালিকা, পারিজাত, নিশিপুষ্পিকা ইত্যাদি৷ এই ফুল রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়, তাই ল্যাটিনে এর নাম ‘নিকট্যানথেস অ্যার্বোর ট্রাইস্টিস’। কাশফুলের মতো শিউলিও আমাদের কাছে আবাহনী৷ তাই শিউলি ফুল ছাড়া শারদ উৎসব মানুষ ভাবতেই পারেনা। এককথায় শিউলি ফুল বাঙালির কাছে শারদ আনন্দের প্রতীক৷ শিউলি ফুল ফোটা শুরু হওয়া মানেই পুজোর আনন্দে খুব খুশি হয়ে ওঠে আমাদের মন। ফুলের সৌন্দর্য ও স্নিগ্ধতার ছাড়াও রয়েছে এর কয়েকটি বিশেষ গুণ, যা সম্বন্ধে হয়তো আমরা অনেকেই অবগত নই। আজ তা নিয়েই চলবে বিস্তারিত আলোচনা।
পুজোর আগে শরৎকালে প্যাচপ্যাচে গরমের সাথে খানিকটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভাবও উপলব্ধি হয় বৃষ্টি হলে। এই ঋতু পরিবর্তনের কারণে অনেকেই সর্দি কাশিতে ভোগেন। তাই এই আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি ধারায় শিউলিপাতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ৷ তাই এই সময় নিয়মিত আহারে শিউলিপাতা খাওয়া ভালো। মধুর সঙ্গে শিউলিপাতার রস সেবন করলে খুব তাড়াতাড়ি এই রোগ থেকে উপশম পাওয়া যায়। বাতের ব্যথাতেও খুব উপকারী শিউলিপাতার রস৷ জলের সঙ্গে শিউলিপাতার রস মিশিয়ে পান করলে বশে থাকে আর্থ্রাইটিস ৷
বদহজম বা হজমের গণ্ডগোল সাড়ানোতেও কাজ করে শিউলিপাতার রস। মুখে রুচি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে ৷ বাচ্চাদের কৃমির সমস্যা থাকলে শিউলি পাতার রস পান করানো যেতে পারে। এমনকি মধুমেহ রোগ নিয়ন্ত্রণেও শিউলি পাতা উপকারী ৷শুধু মরসুমি ভেষজ হিসেবেই নয় ৷ সারা বছরই শিউলি পাতা নিয়মিত খেলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ৷ চুলের সমস্যাতেও শিউলি ফুল এবং এর বীজ ভীষণ কার্যকর। এমনকি খুসকি এবং উকুননাশক হিসেবে শিউলির বীজ কাজে লাগে। হেয়ারটনিক হিসেবে ব্যবহৃত শিউলি ফুলে চুলের গোড়া মজবুত হয় ৷ চুল পড়ার সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। অকালপক্বতা এবং স্ক্যাল্পের অন্যান্য অসুখেও ফলপ্রসূ শিউলিফুল৷ তাহলে আজ থেকে ওষুধের ব্যবহার কমিয়ে ব্যবহার করতে শুরু করুন শিউলিপাতা। দেখবেন হাতে নাতে ফল পাবেন।