মাছে ভাতে বাঙালির ইলিশের প্রতি বরাবর আলাদা দুর্বলতা থাকে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে ইলিশ মেলা দুষ্কর। যদিও বা মেলে, চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় তার দাম এতটাই চড়া থাকে যে মধ্যবিত্ত বাঙালির পাতে ইলিশ ওঠে না। কিন্তু স্বাদে গন্ধে ইলিশ মাছকেও টেক্কা দিতে পারে বোরোলি মাছ। ইলিশ মাছকে যে সরাসরি এমনভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে তাকে উত্তরের ইলিশও বলা হয়।
যদিও এর আকার ইলিশের সমতুল্য নয়, আকারে বড়জোর ৫ থেকে ৬ ইঞ্চির বেশি হয় না এই মাছ। কিন্তু এই মাছের স্বাদ এবং গন্ধে রীতিমত মুগ্ধ মৎস্য প্রেমীরা। কট্টর নিরামিষাশী সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু থেকে শুরু করে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত বোরোলি মাছের ভক্ত।
প্রধানত তিস্তার জলে বোরোলি মিললেও তোর্সা, করলা, রায়ডাক, বালাসন, কালজানিতেও এই মাছ মেলে। তবে তিস্তার জলের বোরোলি স্বাদে গন্ধে সবার সেরা বলে মানেন মৎস্য প্রেমীরা। এখন অবশ্য নদীর জলে এই রুপালি শস্যের যোগান কমেছে। যার জন্য অবশ্য মৎস্যজীবীরা দূষণকেই দায়ী করছেন। মৎস্যজীবীদের দাবি, বোরোলি মাছ অত্যন্ত সুখী মাছ। যে জলে অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি থাকে এই মাছ সেই জলেই থাকে।
খরস্রোতা নদীতে বোরোলি মাছ বেশি পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়াতে নদীর জলের বোরোলি মাছের যোগান কমছে। জল একটি নোংরা হলেই এই মাছ আর সেই জলে থাকতে পারে না। নদীর পরিস্কার টলটলে জলেই খেলে বেড়ায় বোরোলি মাছ। ইলিশের মতোই নদীর স্রোতের বিপরীতে ঝাঁক বেঁধে চলে বোরোলি। প্রধানত বর্ষার আগেই এপ্রিল-মে মাসে অথবা বর্ষার পরে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে এই মাছের দেখা মেলে।