সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

অভিষেকের বি’রু’দ্ধে জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের তদ’ন্তের নি’র্দে’শে পক্ষপাত ছিল না, আদালতে বললো ED

এই রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তাল পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে। রোজ খবরের পাতা খুললেই এক একজন করে ধরা পড়ছে। তারা লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে কিভাবে অযোগ্যদের চাকরি দিয়েছেন আমরা রোজই শুনছি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কুন্তল ঘোষ সকলেই আজ গ্রেফতার।

তবে এখানেই শেষ নয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় – এরও। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করতে পারবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তকারী অফিসাররা।

কিন্তু সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় রেহাই পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় এই নিয়ে গতবছর এবিপি আনন্দে দেওয়া বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারকে তুলে ধরে অভিষেকের তরফে দাবি করা হয়েছিল, অভিষেকের প্রতি তাঁর বিরূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে এই সাক্ষাৎকারে।

তাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পক্ষাপাতিত্বের জেরে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর সেই কারণেই সেই মামলা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সরে যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। এখন সেই মামলার শুনানি হচ্ছে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে।

উল্লেখ্য, বিচারাধীন বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কারণেই অভিষেক ও কুন্তলের মামলাটি সরেছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। এদিকে কয়েক সপ্তাহ আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিলেন যে কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁকে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য চাপ দিচ্ছে।

সেই চিঠির প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান যে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যান অভিষেক। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের বিষয়টি তুলে ধরেন অভিষেকের আইনজীবী।

বলা হয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, তাতে অভিষেকের প্রতি তাঁর বিরূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে সেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটি সরানো হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে।

কিন্তু বিচারপতি সিনহার এজলাসেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে বলেছিলেন। পাশাপাশি অভিষেককে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই আবহে আজকে ইডি আদালতে দাবি করল, ‘অভিষেকের বিরুদ্ধে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের তদন্তের নির্দেশে কোনও পক্ষপাত ছিল না’।

আজকে আদালতে ইডির আইনজীবী দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্ট শুধু এই মামলাটি অন্য এজলাসে সরানোর নির্দেশ দেন। তবে এই মামলার মেরিটের ওপর কোনও কিছু বলা হয়নি শীর্ষ আদালতের তরফে। দুর্নীতি যে হয়েছে এটা সবাই জানেন। এই ধরনের আর্থিক দুর্নীতি সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়।

উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সঙ্গে তাঁকে যুক্ত করার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই আজ শুনানি হয় আদালতে। মূলত, সুপ্রিম নির্দেশিকার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে মামলার ফাইল চেয়ে পাঠায় কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কার্যালয়।

পরে সেই ফাইল বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে পাঠানো হয়। এই মামলার শুনানি চলাকালীন গত ৮ মে বিচারপতি সিনহা প্রশ্ন করেন, ‘তদন্তে সহযোগিতা করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্যা কোথায়?’ তিনি আরও পর্যবেক্ষণ করেন, তদন্তকারীরা প্রয়োজনে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যুক্ত করার নির্দেশ দেন তিনি বলে জানা যাচ্ছে।