বাইক প্রেমীদের পছন্দের প্রথম তালিকায় যদি কোনো বাইক থাকে সেটা হয়তো রয়াল এনফিল্ড। কিন্তু এই বাইকটি একটি জায়গায় পূজো করা হয় দেবতা জ্ঞান করে। নিশ্চই ভাবছেন এও কি সম্ভব? হ্যা সম্ভব। জানা যাচ্ছে রাজস্থানে একটি মন্দির রয়েছে সেই মন্দির হলো ‘ বুলেট বাবার ‘ মন্দির। একটি রাস্তার পাশে এই মন্দির রয়েছে। ওখানের স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস এই রোড দিয়ে যাওয়ার আগে যদি এই মন্দিরে পূজো দিয়ে যাওয়া যায় তাহলে তাঁর কোনো দুর্ঘটনা হবে না।
কিন্তু এই মন্দির কিভাবে হলো? কেনোই না হলো? আসুন জেনে নেওয়া যাক। এটি একটি অলৌকিক গল্প বলা যায়। কারণ এর ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়নি। ঘটনাটা ঘটে ৩ দশক আগে। এক বাইক আরোহী রাজস্থানের মেন রোড দিয়ে গভীর রাতে ছুটে চলেছে তাঁর ৩৫০ সিসির রয়্যাল এনফিল্ড নিয়ে। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর আরএনজে ৭৭৭৩।
কিন্তু ওই রোড ধরে যাওয়ার পথেই হঠাৎ রাস্তার ধারের খাদে বাইকটি পড়ে যায়। মারা যান গাড়ির চালক ওম সিংহ রাঠৌর। পড়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। তাঁরা উদ্ধার করে সেই মৃতদেহ। জানা যায় গাড়িটি ব্রেকফেল করে আর বাইক আরোহী একটি গাছে ধাক্কা মারে আর ধাক্কা লাগার পরেই খাদে পরে যায় ওম সিংহ। এর পর তাঁর ভাঙাচোরা বাইকটি।
আরো পড়ুন: সামনেই পুজো, ভুঁ’ড়ি ক’মা’তে জি’মে ঘা’ম ঝড়াচ্ছেন শ্রাবন্তী, রইলো ভিডিও
পুলিশরা সেই বাইকটি নিয়ে পুলিশ স্টেশনে চলে আসে। এতদূর অবধি ঠিক ছিল। কিন্তু পরেরদিন ঘটে একটি আশ্চর্যজনক ঘটনার। পুলিশ স্টেশনে রাখা ওই বাইকটি আর ওখানে দেখতে পাওয়া যায়না। অনেক খোঁজা খুঁজি করার পর ওটা পাওয়া যায় সেই ঘটনাস্থলে যেখানে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিলো।
অবাক হলেও পুলিশরা আবার ওই বাইকটি পুলিশ স্টেশনে এনে রাখেন কিন্তু তার পরেরদিন আবারও একই ঘটনা ঘটে। তারপর তারা চেন দিয়ে বেঁধে রাখেন তার পরেরদিন ও একই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাস্থলে পাওয়া যায় বাইকটি। আর এই ঘটনার পর থেকেই স্থানীয়রা বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে ওই বাইক আরোহী ওম সিংহ ওই বাইকটির মধ্যেই বেঁচে আছেন। আর তাই ওই বাইকটি ওখানেই রেখে দেওয়া হয়।
এছড়াও স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নেন, বাইকটি সেখান থেকে আর সরানো হবে না। জোধপুর থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে পালি-জোধপুর হাইওয়ের উপর প্রয়াত বাইকচালকের নামে একটি মন্দির বানানো হয়। ওম বান্নার এই মন্দিরটি ‘বুলেট বাবা’র মন্দির নামে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। পালি-জোধপুর হাইওয়ের উপর দিয়ে তাই বর্তমানে যে যাত্রীরাই বাইক, ট্রাক অথবা গাড়ি নিয়ে যাত্রা করেন না কেনো, প্রায় সকলেই এই মন্দিরে পুজো দেন।
এই মন্দিরে প্রতি দিন সকাল ও সন্ধ্যায় বাইকটিকে পুজো করা হয়। একটা পুরনো দিনের ঢাক বাজিয়ে মন্ত্র বলে পূজো করা হয় ওই বাইকটি।এই মন্দিরে পুজোর প্রসাদেও রয়েছে বিচিত্রতা। জানা যায় এই বুলেট বাবার পুজোয় মদ কে প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়। চালকেরা মদের বোতল ভোগ হিসেবে অর্পণ করেন। স্থানীয়রা মনে করেন বেশির ভাগ এক্সিডেন্ট মদ্যপ অবস্থায় চালানোর কারণেই ঘটে তাই এই বাবার মন্দিরে মদের ভোগ চরালে কোনো দুর্ঘটনায় হবে না।
তারা এও বলেন যে এখনও অবধি যারা পূজো দিয়ে গেছেন এই রাস্তা দিয়ে তাদের কারো পথ দুর্ঘটনা ঘটেনি। ভারতের দর্শনীয় মন্দিরগুলির তালিকায় ১৭ নম্বর স্থানে রয়েছে জোধপুরের ‘বুলেট বাবা’ মন্দিরের নাম। এই মন্দির এতটাই জনপ্রিয় যে ভক্তদের ভির হয় দেখার মতন। সবাই শুধু পূজো দিতে নয় মন্দির টাকে দেখবে বলেও আসে।