উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলায় আরও একবার প্রমাণ মিলল যে বিয়ে এক কথায় হয় না, লাখ কথায় হয়। আর এসব বিষয়ে তাড়াহুড়ো করতে গেলেই প্রায়শই ভুল হয়ে যায়। আলিগড় জেলার এক যুবক বিয়ে করতে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে তড়িঘড়ি বিয়ের সম্বন্ধে সম্মতি দিয়ে দেন। কনের বিষয়ে সামান্য খোঁজটুকুও নেন নি তাঁর পরিবারের সদস্যরাও, তার আগেই হ্যাঁ বলে দেন। কনের পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভালো না থাকায় বিয়ের সব খরচ বহন করতেও সেই যুবক ও তাঁর পরিবার রাজি হয়ে যান। ঠিকঠাক বিবাহও সম্পন্ন হয়। কিন্তু তারপর ফুলশয্যায় কনের কাণ্ডের কথা শুনে সকলে হতবাক হয়ে যান।
অতরৈলী গ্রামের বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সী এক যুবকের কিছুতেই বিয়ে হচ্ছিল না। সেই কারণেই তাঁরই গ্রামের এক পরিচিত এক সম্বন্ধ দেখেন। তিনি জানান যে দিল্লির এক পাত্রী রয়েছে, কিন্তু তাদের পরিবার খুব গরীব। তাই মেয়ের বাড়ির লোক বিয়ের আয়োজনের জন্য কোনো খরচই করতে পারবেনা। বরের বাড়ির সদস্যরা দিল্লি যান পাত্রী দেখতে। পাত্রী দেখে তাঁদের পছন্দ হয় এবং দেরী না করে, কোনো খোঁজ খবর না নিয়ে পাত্রীপক্ষের শর্ত মেনে দিল্লিতেই পাত্রের বাড়ির লোকেরা ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেন তাঁদের। দিল্লীতেই গাজিয়াবাদ আদালতে তাঁরা বিয়ে সেরে কনেকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন ওই যুবক।
রাতে ফুলশয্যাতে প্রথামাফিক নববিবাহিতা স্ত্রী’র হাতে দুধ পান করেন ওই যুবক। পান করার সাথে সাথেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর গয়না, টাকাপয়সা ইত্যাদি নিয়ে রাতেই শ্বশুরবাড়ি থেকে চম্পট দেন কনে। সকালে দীর্ঘক্ষণ ওই যুবক ঘরের দরজা খুলছে না দেখে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই দেখেন যুবকটি অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর নববধূর চিহ্নমাত্র নেই ওই ঘরে। বিষয়টা বুঝতে পারেন বাড়ির সকলে। জ্ঞান ফিরতেই ওই যুবক জানান, দুধ খাওয়ার পরেই মাথা ঘুরে যায় তাঁর। এরপর সব অন্ধকার। আর কিছু মনে নেই। যুবকের ভাইয়ের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
বরপক্ষের লোকজনরা এ বিষয়ে জানান যে, কনে আসার সময় থেকেই পেট ব্যথার ভান করছিলেন। তখনই তাঁদের সন্দেহ হয়েছিল। শ্বশুরবাড়ি এসেই কনে আলাদা ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। শুধু এ ঘটনাই নয়, সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কয়েকটি ‘ডাকাত বধূর’ ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও দিল্লির আশেপাশে ঘটে যাওয়া এই ধরণের বেশ কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে যে কনে দরিদ্র পরিবারের। তাই বিয়ের খরচ দিতে হবে পাত্রকে। আর ছোটো অনুষ্ঠান করে বিয়ে হবে। এরপর কখনও শুধু বর, কখনও পরিবারের সদস্যদের সকলকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ‘ডাকাত কনেরা’ বিয়ের গয়না, বাড়ির সকলের সোনার অলঙ্কার, টাকা, পোশাক নিয়ে বেপাত্তা হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে গোয়েন্দাদের বক্তব্য, এটি আলাদা আলাদা ঘটনা নয়, নির্দিষ্ট কোনও গ্যাং এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত আছে।