অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন পূর্ণাঙ্গ রাজধানী হতে চলেছে বিশাখাপত্তনম। মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগমোহন রেড্ডি জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বন্দর শহরে স্থানান্তরিত করা হবে নতুন রাজধানী। দিল্লিতে ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোম্যাটিক অ্যালায়েন্স মিট – এ শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সকলকে বিশাখাপত্তনম আমন্ত্রণ জানাচ্ছি আমি। পরবর্তী রাজধানী হতে চলেছে এই শহর।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আমিও চলে যাব বিশাখাপত্তনম। আগামী তিন এবং চার মার্চ গ্লোবাল ইনভেস্টার সামিটের আয়োজন করছি আমরা। অন্ধের মুখ্যমন্ত্রী এই বক্তব্যেকে তার পূর্ব ঘোষিত তিন রাজধানীর তত্ত্ব থেকে সরে আসার ইঙ্গিত বলেই মনে করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ বিভাজনের সময় তিনি রাজধানী হায়দ্রাবাদ কে নতুন রাজ্য তেলেঙ্গানার রাজধানী বলে ঘোষণা করেছিলেন।
এরপর ২০১৫ সালে খন্ডিত অন্ধ্রপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলেগু প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু সে রাজ্যের বাণিজ্যিক রাজধানী বিজয় বাড়ার ৪০ কিলোমিটার দূরে অমরাবতী শহরকে নতুন রাজধানী বলে ঘোষণা করেছিলেন। সেই একই বছর অমরাবতীকে অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরো খবর: আয়কর কাঠামোতে বড় বদল ঘ’ট’তে পারে বাজেটে! হাতে থা’ক’তে পারে অতিরিক্ত টা’কা
অন্ধ্রপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা ওয়াই এস আর কংগ্রেসের নেতা জগমোহন সেই সময় চন্দ্রবাবুর ওই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছিলেন। অমরাবতীতে অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন রাজধানী হবে এমন কথা মনে করে অনেকেই সেখানে জমিয়েই কিনে ফেলেছিলেন।
২০০৯ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর জগো মোহন ওই জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগের ঘটনা তদন্তে নির্দেশ দিয়েছিলেন, পাশাপাশি অমরাবতী রাজধানী গড়ার প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২০ সালে অমরাবতীর পাশাপাশি বিশাখাপত্তনাম এবং কুর্নুলকে রাজধানী ঘোষণা করে সরকারি দপ্তর গুলি এই তিন শহরের বণ্টনের পরিকল্পনা ঘোষিত হয়।
#WATCH | "Here I am to invite you to Visakhapatnam which will be our capital in the days to come. I will also be shifting to Visakhapatnam in the months to come": Andhra Pradesh CM YS Jagan Mohan Reddy at International Diplomatic Alliance meet in Delhi pic.twitter.com/wANqgXC1yP
— ANI (@ANI) January 31, 2023
অন্ধ্র বিধানসভায় পাস হওয়া বিলে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের প্রধান সচিবালয় রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন হবে উপকূলীয় শহর বিশাখাপত্তনামে। অমরাবতীতে তৈরি হবে বিধানসভা। অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের ঠিকানা হবে রায়লসীমা অঞ্চলের কুর্নুলে। কিন্তু অমরাবতী তে পূর্ণাঙ্গ রাজধানী নির্মাণের দাবিতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয় অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টে।
এই আবেদন মেনে গত মার্চ মাসে অনগ্রহ হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ছ মাসের মধ্যেও অমরাবতীকে পূর্ণাঙ্গ রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অন্ধপ্রদেশ সরকার। তিন রাজধানীর বিলটি প্রত্যাহার করে দেওয়া হয় কোর্টের তরফ থেকে। সেই বিতর্কে এর মধ্যেই এবার উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশের শহর বিশাখাপত্তনমী পূর্ণাঙ্গ রাজধানী গড়ে তোলার কথা জানালে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার।