সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

স্কুল বাঁ’চা’তে চপ ভাজা শুরু করেছেন প্রধান শিক্ষক, ইনকামের টা’কা’য় বেতন দিচ্ছেন অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের

স্কুলকে বাঁচানোর জন্য শিল্প হিসেবে বেছে নিলেন চপ শিল্পকে। একটি বেসরকারি নার্সারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার স্কুলকে বাঁচানোর জন্যই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামে।

করোনার দাপটে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিল এরকম সময়ে দিনের পর দিন স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা ঠেকে ছিল তলানির দিকে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে স্কুল বন্ধ থাকার জন্য পড়ুয়াদের মাইনেও দিতে পারতেন না অভিভাবকেরা।

এর ফলে স্কুলের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। এই অবস্থায় আশঙ্কা করে বেসরকারি নার্সারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছিল যে অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে যে স্মার্টফোনের দরকার হয় সেটা বেশিরভাগ পরিবারের কাছে কাছেই ছিল না ।

এই রকম অবস্থাতে এমন ঘটেছে যে শিক্ষিকাদের অনলাইন ক্লাস করানোর জন্য শিক্ষিকাদের ফোনে ভরে দিতে হয়েছে অনেক সময় টাকা। এরপর বাণিজ্য স্নাতকোত্তর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তিমির মল্লিক একটি উপায় বেছে নিলেন টাকা উপার্জন করার।

আরো পড়ুন: সুচিত্রা সেনের নাতনি রিয়া সেনের ফি’ল্মি কেরিয়ার এই একটি MMS-র জন্য ঢু’বে গি’য়ে’ছে!

তিনি চপ এবং মিষ্টির দোকান দিলেন। দেড় বছর ধরে খুব ভালো চলছে ওই দোকানটি। যেটা লাভ হয় সেটা দিয়েই তিনি ১৫ জন শিক্ষক এবং ৬ জন শিক্ষা কর্মীদের বেতন দেন। এই স্কুলটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৭ সালে।

এই স্কুলটির রয়েছে দুটি শাখা একটি ইংরেজী আরেকটি বাংলা। করোনার আগেই স্কুলটিতে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস করানো হতো এবং পড়ুয়া ছিল প্রায় সাড়ে ৭০০ র কাছাকাছি। ২০২০ সালের সমস্ত কিছু একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে গেল।

স্কুলের বেতন দেওয়া বন্ধ করে দিল বেশিরভাগ অভিভাবকরা, এইরকম অবস্থায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন প্রধান শিক্ষিক দুমাস চালাতে পারে। পড়ে আর সম্ভব হয়নি অবশেষে কি করবেন ভেবে তিমির বাবু চপ মিষ্টির দোকান দিলেন।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে তিনি এ ব্যবসা শুরু করেন। প্রধান শিক্ষক তিমির বাবুর সঙ্গে যোগদান করেন কল্পনা সিংহ, সন্দীপ নারায়ন দেব, দুর্গা দে সহ আরো অনেকে। এই দোকানটির ছিল অরণ্য শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে।

আরো পড়ুন: কিছুক্ষণ পর না’ম’তে চ’লে’ছে বৃষ্টি! দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া নিয়ে ব’ড়ো আপডেট হাওয়া অফিসের

সন্ধ্যেবেলা অথবা সকালবেলা যারা হাঁটতে যান তারা তিমির বাবুর দোকানের চা পছন্দ করে ফেললেন এরপর অবশ্যই দোকানে তারাই নিত্য ক্রেতা হয়ে দাঁড়ালেন। নানান রকমের জিনিস এই দোকানটিতে বিক্রি করতে শুরু করেন তিমির বাবু।

সকালবেলায় আলুর চপ, কচুরি, ঘুগনি, ইডলি, এইসব বানানো হয় এবং বিকেল বেলা ভেজিটেবিল চপ, ডিমের চপ, চিকেন চাওমিন, সিঙ্গারা ইত্যাদি। অন্যদিকে মিষ্টি হিসেবে এখানে বিক্রি করা হয় রসগোল্লা, মিষ্টি দই, গজা।

এই বেসরকারি নার্সারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক তিমির বাবু জানিয়েছেন যে, তিনি দোকানটির লাগোয়া যে জমি রয়েছে সেটায় আগামী দিনে একটি আদিবাসী শিশুদের জন্য তৈরি করবেন অবৈতনিক স্কুল।