একতা কপূরের ‘কসৌটি জিন্দেগি কে’ খুব জনপ্রিয় একটি ধারাবাহিক এটা আমরা সকলেই জানি। আর তার সাথে এই ধারাবাহিকের খুব জনপ্রিয় মুখ কমলিকা বসু ওরফে ঊর্বশী ঢোলাকিয়া। তার নেগেটিভ চরিত্র দর্শক আজও মনে রেখেছে। গাঢ় লিপস্টিক, কপালে কুমকুম আর বাহারি শাড়িতে সেজে যখনই পর্দায় আসতেন তিনি, ভেসে উঠত সুর— ‘ক-ম-লি-কা’!
পর্দায় কমলিকা সব সময়ই পরিকল্পনা করতেন অন্যের জীবনের শান্তি কিভাবে ছিনিয়ে নেওয়া যায় অথচ বাস্তব জীবনে কমলিকার জীবন ছিল যথেষ্ট বেদনাদায়ক।
তাকে নিজেকেই নিজের সংসার চালাতে হয়েছে। তাঁর জীবনের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত তাঁকে অনেক বেশি স্ট্রাগল করতে বাধ্য করে।
ঊর্বশী ঢোলাকিয়া ছোটো থেকেই চাইতেন একজন অভিনেত্রী হবেন। সেই মত নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টাও করতে থাকেন। প্রথমে একটি নামী সংস্থার বিজ্ঞাপনী প্রচারে টেলিভিশনে দেখা যায় তাঁকে। তারপর দূরদর্শনের ধারাবাহিক ‘শ্রীকান্ত’-এ শিশু শিল্পী হিসাবে অভিনয়।
এরপর একটু বড়ো হওয়ার পর ‘দেখ ভাই দেখ’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেন। তারপর একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয় এবং পড়াশোনা— দুটোই সমান্তরাল ভাবে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১৯৯৩ সালে ‘দেখ ভাই দেখ’ ধারাবাহিকে অভিনয় করার সময় থেকেই একজনার প্রেমে পড়েন উর্বশী। আর অল্প বয়সের ভুলে তাঁকে তড়িঘড়ি করে বিয়ে করে নেন মাত্র ১৬ বছর বয়সেই। কিন্তু বিয়ের পর তাঁর জীবনটা মোটেই সুখের ছিল না।
তাঁর উপর যে মানসিক নির্যাতন চলত, তা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারতেন না তিনি। এই পরিস্থিতির মধ্যেই মাত্র ১৭ বছর বয়সে ঊর্বশী যমজ সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু কোনোভাবেই আর সংসার করতে পারছিলেন না উর্বশী আর তাই শেষ অব্দি বিচ্ছেদের কথা ভাবেন তিনি। এর পর ওই ১৮ বছর বয়সেই দুই বাচ্চা নিয়ে উর্বশী তার বাপের বাড়ি ফিরে আসে।
সেখানে বাবা মা তাঁকে অনেক সাপোর্ট দেয়। কিন্তু তার বাবার কাজ থেকেও অবসর নেওয়া হয়ে যাওয়ায় তাঁকেই কাজের সন্ধানে বেরোতে হয়। দুই সন্তান কেও মানুষ করেছেন নিজে কাজ করেই। সাথে করে নিজের পড়াশোনাও করেছেন। খুব কষ্ট করে হলেও নিজের সমস্ত দায়িত্ব পালন করেছেন উর্বশী। ঊর্বশীর বয়স এখন ৪৩।
প্রায় ৩৩ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন। এখনও সক্রিয় ভাবে কাজ করে চলেছেন। মাত্র আঠেরো বছর বয়স থেকেই ঊর্বশী একা মানুষ করেছেন দুই ছেলে সাগর আর ক্ষিতীশকে। সাথে নিজের কেরিয়ারকেও বজায় রেখেছে। অনেকেই তাঁকে বলে থাকেন এত অল্প বয়স থেকে একা সন্তান মানুষ করা বেশ কঠিন ছিল নিশ্চিন্তে কাছে।
আরো খবর: প্রবা’দ আছে “দুধ-কলা দিয়ে কাল’সাপ পো’ষা”, সত্যিই কি সাপ দুধ খা’য়?
কিন্তু তাঁর মতে, ‘পুরোটাই নির্ভর করছে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির উপরে। কঠিন ভাবলে কঠিন। কিন্তু আমার পাশে সব সময়ে পরিবার ছিল। মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী সকলে। তাই কাজটা কঠিন বলে ভাবতেই চাইনি।’ তাঁর এই মনের জোর দেখে তার দুই ছেলেও অনুপ্রাণিত হয়। তারাও ভবিষ্যতে অভিনেতা হতে চান সে কথাও জানা যায়।
