সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

দেশসেবা করেছেন! এতদিন “প্রতারক”কে র’ক্ষা করে ল’জ্জা’য় পড়েছেন প্রাক্তণ বাঙালি সৈনিক

“এতদিন ধরে একজন প্রতারককে রক্ষা করে গেছি” এই কথা বলে লজ্জিত বোধ করলেন বাঙালি এক সৈনিক। এরকমভাবে নিখুঁত পরিকল্পনা করে কেউ যে এত দূরে যেতে পারে সেটা বিষয়ে গোটা দেশ অবাক। আইএএস অফিসার সেজে দেবাঞ্জন দেব এতদিন পর্যন্ত নিজের সমস্ত পরিকল্পনাকে সাফল্য দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে একাধিক নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে কাজ করেছেন, এমনকি নীল বাতি লাগানো গাড়িও ব্যবহার করেছে তিনি। একজন ভুয়ো আইএএস অফিসার সেজে দীর্ঘদিন ধরে তার পরিকল্পনাগুলোকে সাফল্য দিচ্ছিল সেই বিষয়ে একটুও কেউ টের পর্যন্ত পায়নি। এই পরিচয় নিয়ে যাতে কেউ সন্দেহ না করে, তার জন্য কোনরকম ত্রুটি রাখেনি সে।

দেবাঞ্জনের নিরাপত্তারক্ষী ছিল এক প্রাক্তন বিএসএফ কর্মী অরবিন্দ বৈদ্য। তার বক্তব্য থেকেই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। এখন তার নিজের খারাপ লাগছে যে, দেশের সেবা করে আসার পর তিনি একজন প্রতারককে রক্ষা করে গেছেন দীর্ঘদিন ধরে, এটা তার কাছে ভীষণ লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অরবিন্দ বৈদ্য ২০১৮ সালে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তরফ থেকে অবসর নেন এবং তার পরেই তিনি সোনারপুরে ছিলেন। অবসর নিয়ে নেওয়ার পর তিনি একটি চাকরি খুজঁছিলেন। অরবিন্দ বৈদ্যর থেকে জানা যায় যে, পাঁচ মাস আগে তার কাছে একটি বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য ডাক আসে। অরবিন্দর ইন্টারভিউ নিয়েছিল দেবাঞ্জন। ইন্টারভিউতে উর্ত্তীন্ন হওয়ার পর সরকারি কাজের জন্য নিয়োগপত্র দেওয়া হয় অরবিন্দ বৈদ্যকে।

দেবাঞ্জনের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করতো অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ সেনা। অরবিন্দর থেকে আরো বলেন য, “দেবাঞ্জন এমন ভাবে কথাবার্তা বলতে এবং এমন ভাবে চলাফেরা করত যে কখনোই তাকে মনে হয়নি যে সে, একজন নকল আইএএস। এমনকি আমাকে যে নিয়োগপত্র দেয় তাও নবান্নের নাম করেই। থানায় যখন সেই নিয়োগপত্রটি দেখানো হয় তখন তারা জানায় যে ওটা সম্পূর্ণভাবে জাল”।

তিনি আরো জানায় যে, “অফিসের মাধ্যমেই তিনি টিকা নিয়েছেন এবং তার সঙ্গে তার স্ত্রী এবং ছেলেও নিয়েছে। দেবাঞ্জন নিজের মা-বোনকেও ওই একই টিকা দিয়েছিলেন, দেবাঞ্জন তার অফিসের সমস্ত কর্মীকে ঐ টিকাই দিয়েছিলেন। অফিসের কর্মীরা যখন টিকার সার্টিফিকেট চেয়েছিল তখন, দেবাঞ্জনা তাদের ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছিল”। সোনারপুরের এই বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ কর্মী অরবিন্দ বৈদ্যর এখন একটাই আফসোস রয়েছে যে, দেশের কাজ করে তিনি অবশেষে কিনা একজন প্রতারককে রক্ষা করে গেছেন যা সত্যিই তার পক্ষে ভীষন লজ্জার ব্যাপার।