আমাদের দেশ ভারতবর্ষ মূলত নদীমাতৃক দেশ। কারণ এই দেশে নদীর সংখ্যা অগুনতি। আর প্রতিটি নদীরই নিজস্ব কিছু কাহিনী আছে। তবে আজ বলব বছরের পর বছর ধরে সোনা বয়ে নিয়ে বেড়ানো এক নদীর কথা। জানেন কি সেই নদীর নাম!
ঝাড়খণ্ডের সুবর্ণরেখা নদীর নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই! সুবর্ণরেখা নদী মোট ৪৭৪ কিমি পথ অতিক্রম করে। তার কিছুটা বাংলার মধ্যেও রয়েছে। জানেন কি! এই নদীর জলে শীতকালে সোনা পাওয়া যায়। অনেক বছর ধরে বিজ্ঞানীরা এই নদীতে প্রবাহমান সোনার আসল উৎসের খোঁজ করছে। শুধু নামই নয়, বরং সুবর্ণরেখা নামের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখে এই নদীও বছরের পর বছর ধরে সোনা বয়ে বেড়াচ্ছে।
শোনা যায়, ঝাড়খণ্ডের কিছু কিছু এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ এই নদীতে সকালে গিয়ে বিকেলে বাড়ি ফেরেন সোনার কণা নিয়ে। এই নদীর জলে সোনার উপস্থিতির কারণে অনেকে এই নদীকে স্বর্ণরেখা বলেও ডাকে।
তমাড় ও সারণ্ডা এলাকায় বহু আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ বছরের পর বছর ধরে নদীর জল থেকে সোনার কণা সংগ্রহ করছেন। কয়েক প্রজন্ম এই কাজ করছেন তাঁরা। তবে কাজটা একেবারেই সহজ নয়। সারাদিন পরিশ্রম করতে হয় তাঁদের।
অনেকেরই ধারণা, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ এত সোনার কণা পেয়ে ধনী হয়ে গিয়েছে। আসলে ব্যাপারটা অতি সহজ মনে হলেও কাজটা কিন্তু বেশ কঠিন। খুব পরিশ্রমের কাজ। সারাদিন পরিশ্রম করে নদীর বালি থেকে সোনার কণা খুঁজে বের করতে হয়। কোনো কোনো দিন আবার একটি কণাও সোনা তাঁদের কপালে জোটে না। শূন্য হাতে ফিরতে হয়।
বেশিরভাগ সময় সারাদিনের পরিশ্রমের পর একটি বা দুটি কণা সংগ্রহ করে। আর সেইসব কণা তারা খুবই কম দামে বিক্রি করেন। এতো পরিশ্রম করেও একেকজন মাসে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকার বেশি উপার্জন করতে পারেন না।