পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে একটা নিয়ম রয়েছে সেটা হল প্রত্যেকদিন মন্দিরের দ্বার ফিতা, আলতি, আবকাশ নীতি। পরের দিন নিয়ম অনুসারে সাজানো হয় দেবতাদের। দেবতাদের নিবেদন করা হয় কালো ছোলা এবং গম থেকে তৈরি পিঠা এবং ঘি দিয়ে রান্না করা পহিলি ভোগ।
সূর্যের ধনু সংক্রান্তি অর্থাৎ ধনু রাশি বা ধনু রাশিতে স্থানান্তরকে চিহ্নিত করা হয় ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এটি একমাস ধরে চলে। এই গ্রহণের দিনটিকে বলা হয় ধনু সংক্রান্তি। ওড়িশায় ধনু সংক্রান্তি উৎসবটি বেশ জনপ্রিয়, এই দিনগুলিতে নিয়ম-নীতি অনুসারে সূর্য দেবতা এবং ভগবান জগন্নাথের উপাসনা করা হয়।
কৃষকেরা এই উৎসবের সময় ওড়িশায় নতুন ফসল সংগ্রহ করেন । এই উৎসব চলে পৌষ পূর্ণিমা, পূর্ণিমার দিন পর্যন্ত। এই দিনটিতে সমস্ত পরিবাররা একত্রিত হয়ে নানা রকম মিষ্টি ভোগ বানিয়ে ভগবানকে অর্পণ করেন যেগুলি পরবর্তীকালে প্রসাদ হিসেবে বিলি করা হয়।
আরো খবর: আপনি কি সূর্যাস্তের পর এই কা’জগুলি করেন? তবে নিজের স’র্ব’না’শ নিজেই করছেন!
পৌরাণিক ইতিহাস অনুসারে বলা হয় যে এই দিন থেকে দেবী মহালক্ষী তার বাপের বাড়ি যান এক মাসের জন্য, সেই কারণে ভগবান জগন্নাথের মা যশোদা লক্ষ্মীর জন্য খুব ভোরে ওঠেন এবং রান্নাবান্না করেন এবং সেগুলি মা লক্ষ্মী বাপের বাড়িতে যাওয়ার সময় রাস্তায় খাবারের জন্য নিয়ে যান।
এই নিয়ম নীতিগুলি পরীর মন্দিরে পালন করা হয়। এই প্রসাদ টার নাম হল পাহাড়ি ভোগ। বল্লভ ভোগের সঙ্গে এই ভোগ এই মাসে ভগবানকে অর্পণ করা হয়ে থাকে। এছাড়াও পঞ্চ উপচার বিধি নামের কিছু আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবতাদের পূজা করা হয়ে থাকে। এছাড়া গোটা মাস জুড়ে ধনু মুয়ান উপভোগ করা হয়।
ধনু সংক্রান্তির সময় ওড়িশার বারগড় শহরে পথনাটকের আয়োজন করা হয়ে থাকে, এই নাটকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনের বিভিন্ন পর্বগুলোকে দেখানো হয়। শহরের প্রত্যেকটা মানুষ এই নাটকে অংশগ্রহণ করে থাকে। বারগড় ধনু যাত্রা আর সঞ্চার নামের একটি শিল্পের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠভাবেই জড়িত রয়েছে।
এই শিল্পের একটি ত্রিমুখী গান সংগীত এবং নৃত্যের সঙ্গে মৃদঙ্গ প্রধান তাল বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পরিবেশিত করা হয়। এছাড়া এই সময় ভাগবত, রামায়ণ, রাসারকেলি, ঝুম্পা, রূপক, দাদরা গাওয়া হয়ে থাকে।