মৃত্যুর প্রায় ৫২ বছর পর ইস্যু করা হলো ডেথ সার্টিফিকেট। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এমন একটি মামলার সাক্ষী হয়ে রইল। কিভাবে একজন মৃত্যুর প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে ডেট সার্টিফিকেট ইস্যু করা হলো তা নিয়ে আদালত ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন। পুরুলিয়া রঘুনাথপুরের ঘটনা এটি। ধ্বজাধারী ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল ১৯৬২ সালের ২৮ নভেম্বর। কিন্তু সার্টিফিকেট ইস্যু হয় ২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি অর্থাৎ মৃত্যুর প্রায় ৫২ বছর পর। এত অবধি সবকিছু ঠিকই ছিল কিন্তু সম্পত্তি সংক্রান্ত একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড টেন্যান্সি ট্রাইব্যুনালে, ওই সার্টিফিকেট দাখিল করতে না করতেই শোরগোল পড়ে যায়।
পুরুলিয়ার জেলাশাসকের বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলে ট্রাইবুনাল। সমস্ত বিষয়টি তদন্ত করার পর জেলাশাসকের সার্টিফিকেট বাতিল করার নির্দেশ দেন। জেলাশাসকের এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মৃত ব্যক্তির পরিজন দেবদাস ভট্টাচার্য। বিচারপতি রাজ শেখর মন্থার এজলাসে মামলাটি উঠতে সরকারি কৌঁসুলি আসিস গুহ এবং নরেন ঘোষ দস্তিদার ওই ডেথ সার্টিফিকেটের যাবতীয় বৃত্তান্ত তুলে ধরেন।
শুনানিতে মৃত ব্যক্তির আত্মীয় স্বজনরা জানান, ১৯৬২ সালে ধ্বজাধারী ভট্টাচার্য মারা যাননি। এর পরেও বেশ কিছু বছর বেঁচে ছিলেন তিনি। মৃত ব্যক্তির পঞ্চায়েত প্রধান দের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারা গেছে, ১৯৬৮ সালের ১৬ এপ্রিল ধ্বজাধারী ভট্টাচার্য পঞ্চায়েত অফিস থেকে রাজস্ব সংক্রান্ত একটি নথী সংগ্রহ করেছিলেন।
যে চিকিৎসক ওই ব্যক্তির সার্টিফিকেট ইস্যু করেছিলেন, তার হদিস এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকের নাম এমনকি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার কিছুই পাওয়া যায়নি। রঘুনাথপুর এর বিডিও তদন্ত করে দেখেছেন, ১৯৭০ সালের কাছাকাছি ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই ২০১৪ সালের সার্টিফিকেট একেবারেই সঠিক নয়।
গোটা ঘটনাটি শুনে বিচারপতি শংসাপত্রটিকে বাতিল করার পাশাপাশি জেলাশাসককে অফিস থেকে কি করে এতোবড় জালিয়াতি হয়ে গেল তা নিয়ে তদন্ত করতে বলেন। ভবিষ্যতে যাতে এতো বড় জালিয়াতি আর না হয় তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন বিচারপতি।