সপরিবারে শিবের বাসস্থান হল কৈলাস। কৈলাসকে ঘিরে রয়েছে নানা রহস্য, নানা কাহিনী।রহস্যে ঘেরা এই পর্বত সম্পর্কে এখনও অনেক তথ্য অজানা। এই পর্বতের চূড়ায় আজও কেউ উঠতে পারেননি। তিব্বত মালভূমি থেকে ২২ হাজার ফুট উপরে অবস্থিত কৈলাস। শুধু হিন্দুরা নয়, বৌদ্ধ এবং জৈনরাও পবিত্র বলে মনে করেন কৈলাসকে। যেহেতু কৈলাসে দেব-দেবীর বসবাস, তাই কোনো মানুষ সেখানে যেতে পারেন না বলেই হিন্দুদের বিশ্বাস।
মাউন্ট মেরুর একটি অংশ হল কৈলাস। তিব্বতি ঐতিহ্য অনুযায়ী, ১১ শতকে মিলারেপা নামে এক বজ্রযানী বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এই পর্বতের চূড়ার কাছাকাছি উঠতে সমর্থ হয়েছিলেন। তিনি নাকি সেখান থেকে ফিরে এসে সকলকে সাবধানও করেন যে, ঈশ্বরের বাসস্থানে না যাওয়াই ভাল। তার পরেও নাকি অনেকে সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু হয় তাঁরা পথভ্রষ্ট হয়েছেন, নয়তো মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছেন কোনো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে। ফলে এখনও পর্যন্ত অধরাই থেকে গিয়েছে কৈলাসের চূড়া।
কৈলাস পর্বতের আকার পিরামিডের মতো। অনেকে একে ‘পৃথিবীর কেন্দ্র’ বলেন। এর অপর নাম‘কসমিক অ্যাক্সিস’ বা ‘ওয়ার্ল্ড পিলার’। কৈলাসেই নাকি স্বর্গ এসে পৃথিবীতে মিলেছে।কাহিনির বেড়াজালে মোড়া কৈলাস পর্বত একটা রহস্যের ঘেরাটোপেই রয়ে গিয়েছে। কথিত যে, কৈলাস পর্বত থেকে ফেরার পরে হঠাৎ করে নাকি নখ বা চুল বড় হয়ে যায়। শোনা যায়, কয়েক জন সাইবেরিয়ান পর্বতারোহী কৈলাস পর্বতের ‘নিষিদ্ধ’ এলাকায় গিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বয়স নাকি কয়েক দশক বেড়ে গিয়েছিল। যদিও এর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
কৈলাস পর্বতের পাদদেশেই রয়েছে মানস সরোবর এবং রাক্ষসতাল। ১৪ হাজার ৯৫০ ফুট ওপরে অবস্থিত মানস সরোবর বিশ্বের উচ্চতম মিষ্টি জলের হ্রদ। আশ্চর্যের বিষয়, যত জোরেই হাওয়া দিক না কেন মানস সরোবরের জল সবসময়ই শান্ত থাকে। কিন্তু রাক্ষসতালের জল সব সময় অশান্ত থাকে। প্রচলিত বিশ্বাস যে, শিবকে প্রসন্ন করার জন্য রাক্ষসরাজ রাবণ যে তপস্যা করেছিলেন, তার থেকেই রাক্ষসতালের সৃষ্টি। সে কারণেই এই হ্রদের জল অশান্ত থাকে।