সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

আর্থিক অ’ন’ট’ন? প্রতি বৃহস্পতিবার এই ভাবে পু’জো দিন তুলসী বেদীতে

বাস্তুশাস্ত্র মতে বাড়ির উঠোনে তুলসী গাছ থাকা অত্যন্ত কার্যকরী। ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে তুলসী। আর কমবেশি প্রতিটি হিন্দু বাড়িতেই প্রবেশ দ্বারের সামনে তুলসী গাছ রোপণ করলে সংসারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে। যুগ যুগ ধরে প্রতিদিন সকালে স্নান সেরে তুলসী গাছে জল দেন ঘরণীরা আর সন্ধ্যায় ধূপ-প্রদীপ দেওয়া হয় তুলসী তলায়।
কিন্তু জানেন কি সেই তুলসী গাছের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে আর্থিক সচ্ছলতার।

হিন্দু শাস্ত্রে তুলসী গাছকে শুভ বলে মনে করা হয়। হিন্দু শাস্ত্রে তুলসী গাছকে লক্ষী নারায়নের স্বরূপ হিসেবে ধরা হয়। সেখানে লক্ষীনারায়ণের অবস্থান। তাই তুলসী গাছের প্রতি অবহেলা করা হলে লক্ষীদেবী রুষ্ট হন। আর অন্যদিকে তুলসী গাছের চারপাশ পরিষ্কার থাকলে লক্ষীনারায়ণ সন্তুষ্ট হবেন। এর ফলে আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটে।

লক্ষ্মীর অপর নাম তুলসী। মনে করা হয় তুলসী গাছে স্বয়ং দেবী লক্ষ্মীর বাস। প্রাচীন কাল থেকে বিষ্ণুপ্রিয়া হিসেবে তুলসী গাছকে পুজো করা হয়ে আসছে। তবে মনে রাখবেন, শাস্ত্র অনুসারে, লক্ষ্মীদেবীর আরাধনায় তুলসিপাতা ব্যবহার করতে নেই। তুলসির সঙ্গে শালগ্রাম শিলার অর্থাৎ নারায়ণের বিবাহ হয়। শ্রীলক্ষ্মীও বিষ্ণুপত্নী। তাই তাঁর আরাধনায় তুলসিপাতা ব্যবহার করলে দেবী রুষ্ট হন।

বলা হয় লক্ষ্মীবার অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তুলসী গাছ পুজো করলে জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি অক্ষয় হয়। এদিন স্নান সেরে তুলসী গাছের গোড়ায় দুধ ঢালুন। সন্ধ্যেয় একটা ঘিয়ের প্রদীপ তুলসী গাছের সামনে জ্বেলে রাখুন। তবে, মনে রাখবেন, শাস্ত্র অনুসারে প্রতি রবিবার, একাদশীতে এবং সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের দিনে তুলসী গাছে জল দিতে নেই।

সূর্যাস্তের পর কখনোও তুলসী গাছের পাতা ছিঁড়বেন না। না হলে লক্ষ্মীদেবী রুষ্ট হন ও সেই বাড়ি ত্যাগ করেন বলে প্রচলিত বিশ্বাস। কখনোই শুকিয়ে যাওয়া তুলসী গাছ বাড়িতে রাখতে নেই। এটা অত্যন্ত অশুভ। তাই নিয়মিত তুলসী গাছের গোড়ায় জল দেবেন। তবু যদি কোনও ভাবে গাছটি শুকিয়ে যায় তবে সঙ্গে সঙ্গে সেটি সরিয়ে সেই স্থানে অন্য তুলসী গাছের চারা বসান। তুলসী গাছের শুকিয়ে যাওয়া আর্থিক দৈন্যের ইঙ্গিত দেয়।

দেবী তুলসীকে সর্বদা প্রসন্ন করার জন্য প্রতি দিন স্নানের পর সিক্ত বস্ত্রে একটি ঘটিতে গঙ্গাজল অথবা পরিষ্কার জল নিয়ে ‘নমঃ তুলসী কল্যাণী নমো বিষ্ণুপ্রিয়ে শুভে। নমো মোক্ষপ্রদে দেবী নমঃ সম্পৎপ্রদায়িকে’ মন্ত্র পাঠ করুন। এতে মাতা তুলসী সর্বদা প্রসন্না থাকবেন এবং তাঁর আশীর্বাদে ধনসম্পদ এবং মোক্ষ লাভ হয়।

শাস্ত্র মতে, আর্থিক দুর্ভোগ কাটাতে বাড়ির উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে তুলসী গাছ রাখুন। নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট দিনে সকালে এই গাছে জল দিন। আর সন্ধ্যায় তুলসী তলায় প্রদীপ দিন। অন্য দিকে, বাড়ির প্রবেশ দ্বারে তুলসী মঞ্চ স্থাপন করতে পারেন। এতে প্রতিবেশীদের কুনজর থেকে রক্ষা পাবেন। তুলসী গাছের পাশে কোনও কাঁটা জাতীয় গাছ রাখবেন না। এতে অমঙ্গল ঘনিয়ে আসে। দিনে ছয় থেকে আট ঘণ্টা রোদের প্রয়োজন তুলসী গাছের। তাই এমন জায়গায় তুলসী গাছ রাখুন, যাতে সেটি পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলো পায়।

তুলসী গাছের নানা ঔষধি গুণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবহিত। তুলসী গাছের গুণে যে সর্দি, কাশি, ঠান্ডা লাগা ইত্যাদি সমস্যা সমাধান হয় তা আমরা সকলেই জানি। এছাড়া ঘরে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে পজিটিভ এনার্জি আনে তুলসী। এই জন্যেই প্রাচীন যুগ থেকে তুলসীর বিশেষ আদর ও কদর হিন্দু ঘরে এবং হিন্দু পুরাণে। প্রতিদিন দুটো করে তুলসী পাতা খেলে ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।