সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

আ’গে সে’ক্স এরপর অভিনয়ের সু’যো’গ, ছেলেদেরও টলিউডে এভাবে কা’জ পে’তে হয়!

বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃ’ত্যুর পর গোটা এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে। তিনি জনপ্রিয় হলেও বলিউডের কাছে খুব একটা প্রিয় পাত্র ছিলেন না বলেই হয়তো এত তাড়াতাড়ি পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হল। তার মৃ’ত্যুর সাথে সাথেই সবথেকে বেশি মানুষের সামনে যে প্রশ্নটা উঠে এসেছে তা হলো সিনেমা জগতে নেপোটিজম বা স্বজন পোষণ। আর বলিউডে নেপোটিজম নিয়ে মুখ খুলেছেন কঙ্গনা রানাওয়াত, আয়ুষ্মান খুরানা, অভয় দেওলের মতন তারকারা। আর শুধু বলিউড কেন! টলিউডে কি নেপোটিজম নেই? এবার বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে স্বজন পোষণ নিয়ে সরাসরি মুখ খুলেছেন শ্রীলেখা মিত্র। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই ইন্ডাস্ট্রিতে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আর শ্রীলেখা মিত্রের পর বিস্ফোরক এক মন্তব্য করে বসেন অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন শুধু মেয়েদের নয়, বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ছেলেদেরও নাকি শোয়ার শর্ত দেওয়া হয়! অভিনেতার এই চাঞ্চল্যকর বক্তব্যের পরই গোটা বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নতুন বিতর্কে ফেটে পড়ে।

কিছুদিন আগে নিজের ইউটিউব লাইভে একটি ভিডিও করে শ্রীলেখা মিত্র বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে নেপোটিজম এর অভিযোগে সরাসরি বি’দ্ধ করেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। তবে মূলত তার বক্তব্য ছিল প্রসেনজিৎ ঋতুপর্ণা জুটির প্রেমের জন্যই কোনোদিন ইন্ডাস্ট্রিতে লিড রোল পাননি তিনি। তাছাড়াও তার লাইভে উঠে আসে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় এর কথাও, যদিও পাল্টা পোস্ট করে নাম উল্লেখ না করেই তাকে উত্তর দিয়েছেন স্বস্তিকা যে পোস্টটি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় শেয়ার করেছিলেন কারন শ্রীলেখার কথার মধ্যে স্বস্তিকা ও সৃজিতের স’ম্পর্কের কথা বলেন শ্রীলেখা মিত্র। টোটা রায়চৌধুরীও মুখ খোলেন সৃজিত মুখোপাধ্যয়ের পক্ষে।

অন্যদিকে শ্রীলেখার পক্ষ নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়। শ্রীলেখার উদ্দেশ্যেই তিনি লেখেন যে “তুমি তোমার সত্যিগুলো তোমার মতন করে বলেছ, বরাবরই বলে আসছ, শুধু এভাবে হয়তো প্রথমবার, হয়তো আরো অনেক সত্যি আছে যেগুলো কোনো একটা বিকেলবেলায় বলতে ইচ্ছে করবে, আবার নাও ইচ্ছে করতে পারে। সত্যির একটা চূড়ান্ত ন’গ্ন’তা রয়েছে তাই লজ্জাবোধও প্রবল। শ্রীলেখা তুমি লজ্জা পেও না তাহলে কিন্তু আরও অনেক শ্রীলেখা চুপ করে যাবে।” তবে এইটুকু বলেই থেমে থাকেননি তথাগত। নিজের পোস্টে সরাসরি বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একজন পরিচালকের দিকে আঙ্গুল তুলে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে কলকাতার সেই পরিচালক তার পুরুষ অভিনেতাদের কাস্টিং কাউচ করতেন। তিনি বলেছেন “কজনই বা জানতে চান নামী সচেতন, উদারমনস্ক লেখক তথা পরিচালক তার পুরুষ অভিনেতাদের সিনেমায় সুযোগ দিতে তার সাথে শোওয়ার প্রাথমিক শর্ত ডিঙোতে বাধ্য করতেন।”

টেলিভিশনে কাজ চাইতে গিয়ে এরকম অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন তথাগত। তিনি জানিয়েছেন, “একজন পরিচালক বাড়িতে ডেকে দরজা-জানলা বন্ধ করে, লাইট জ্বালিয়ে অভিনয় শেখাবে বলে কাছে আনতে চেয়েছিল। পরিস্থিতি অন্যদিকে গড়াচ্ছে দেখে সেখান থেকে সরে আসি। যদিও ছোট থেকেই শুনে এসেছি পরিচালক-প্রযোজককে সন্তুষ্ট না করলে ব্ল্যাকলিস্টে থাকতে হয়। এখনও তা চলে আসছে। নতুনদের মধ্যে একাংশই তার শিকার।” এ প্রসঙ্গে তার আরও বক্তব্য, “এখন নিশ্চয় প্রশ্ন উঠবে, যারা ছবিতে চরিত্র পায় তারা কি সবাই ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে পরিচালকের সঙ্গে শুয়ে পাচ্ছে? না, তা একেবারেই নয়। এই যে শ্রীলেখাদি বলল, তার পর ওকেও শুনতে হচ্ছে, ও কী কী করেছে। আমার বক্তব্য, এখানে একের পর এক ঘটনাগুলো গুরুত্বপূর্ণ, যা বলে দেয় আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতি মুহূর্তে অমর্যাদা হয়। এখনও কিছু পরিচালক আছে যাদের এন্টারটেইন করেন পুরুষ অভিনেতারা। কখনও সে’ক্সু’য়া’লি, কখনও বা বাজার করে, চাকরগিরি করে।”

টেলি অভিনেত্রী দেবলীনা মুখোপাধ্যায়ের স্বামী হলেন তথাগত। এক্ষেত্রে দেবলীনার প্রসঙ্গও টেনে আনেন তথাগত। তিনি বলেন, “দেবলীনাকে এক পরিচালক বলেছিলেন, “আচ্ছা, আমি যে তোকে আমার ছবিতে নেব তার বদলে তুই কী দিবি?” দেবলীনা বলে, “কেন, আমি আমার ক্রাফট দেব!” ওই পরিচালক বলেন, “সে তো সবাই দেবে। আর কী দিবি?” এই প্রশ্নটা কিন্তু বার বার অভিনেত্রীদের কাছে আসে। আগেও এসেছে, বর্তমানেও আসছে। ইন্ডাস্ট্রিতে নোং’রা’মো করে সিনেমা তৈরি হয়… আর ভবিষ্যতেও হবে। এটা স্বী’কার করার সময় এসেছে এ বার। আর সেই কারণেই আমাদের সিনেমা এত পিছিয়ে!” দেবলীনাও এরূপ অভিযোগের দিক থেকে পিছিয়ে নেই। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় একটি রিয়্যালিটি শোতে বাংলা সেলিব্রিটিদের সাক্ষাৎকার নিতেন। সেখানে দেবলীনা একবার এসেছিলেন এবং জানিয়েছিলেন যে টলিউডে কাস্টিং কাউচ ভালোমতোই চলে। তার এই বক্তব্যের পর এখনও পর্যন্ত কোনো পাল্টা বক্তব্য আসেনি ঠিকই তবে ভবিষ্যতে এর ফল কোন দিকে গড়াবে এখন সেটাই দেখার।