সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

এবার সত্যিই চোখ রা’ঙা’চ্ছে অ্যাডিনো, আ’ক্রা’ন্তে’র সংখ্যা প্রা’য় ১১ হাজার!

অ্যাডিনো ভাইরাসে কাবু হয়ে রয়েছে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ। দু’বছর থেকে দশ বছরের শিশুদের মধ্যেই এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সংক্রমণ এতটাই বেড়েছে যে সরকারি থেকে বেসরকারি সমস্ত হাসপাতালেই শিশু রোগী ভর্তির জায়গা পাওয়াই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী জানিয়েছেন “করোনা ভাইরাসে যা হয়নি, তাই ঘটছে অ্যাডিনো ভাইরাসে।”

এবার ক্রমাগত বেড়ে চলা শিশু মৃত্যু রুখতে এক বিশেষ টাস্ক ফোর্স তৈরি করল নবান্ন। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে এই টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া অ্যাডিনোভাইরাসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এই টাস্ক ফোর্স।আটজন সদস্যের এই বিশেষ টাস্ক ফোর্সে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়,স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ঢালি প্রমুখ।

সমস্ত জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের থেকে পাওয়া রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ১০ হাজার ৯৯৯ জন অ্যাডিনোতে আক্রান্ত হয়েছিল। মৃতের সংখ্যা ১৯,এদের মধ্যে ১৩ জনের শরীরে কো-মর্বিডিটি ছিল।চিকিত্‍সকদের বক্তব্য, দীর্ঘ সময় ভেন্টিলেটর বা আইসিইউতে রেখে বাচ্চাকে সুস্থ করার পরও আবার অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা।

অনেকক্ষেত্রেই ভাইরাল ইনফেকশন ফুসফুসে স্থায়ী ক্ষত করে দিতে পারে। ছোট্ট শরীরের আরও ছোট ফুসফুসকে মাত্রারিক্ত ক্ষতি করছে ভাইরাসটি। আবার দীর্ঘ সময় ICU-র ঠান্ডায় স্টেরয়েড দিয়ে অসুস্থ শিশুদের চিকিত্‍সা করায়,স্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিচ্ছে অনেকক্ষেত্রে।

আরো খবর: উর্ফির ধাঁ’চে পোশাক পরে ট্রো’লে’র মুখে মনামী! দেখে নিন কি ড্রেস পরেছেন অভিনেত্রী

চিকিৎসকদের মতে অ‌্যাডিনোর (Adenovirus) সংক্রমণের দাপট অন্তত মার্চ পর্যন্ত চলবে। তাই শিশু ও তার পরিবারের লোকদের আরও সর্তক থাকতে হবে। রাজ‌্যজুড়ে সিংহভাগ বাচ্চার মধ্যে জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্টের জন‌্য দায়ী এই অ্যাডিনো ভাইরাসকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা।

অ‌্যাডিনোর জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ এখনও আবিষ্কৃত হয়নি।কয়েকটি ওষুধের কম্বিনেশন ব্যাবহার করা হয় ভাইরাসে ক্ষমতা কমাতে।এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে অসুস্থ শিশুদের স্কুলে পাঠানো যাবেনা। স্কুলে দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে।মাস্ক পরা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘‘শিশুদের মত বড়রাও কিন্তু সমান ভাবে এই ভাইরাসের কবলে পড়ছেন। গলাব্যথা, ঢোক গিলতে অসুবিধা, দীর্ঘ দিন ধরে কাশি— এই সবই কিন্তু অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ। তবে বড়দের খুব একটা ক্ষতি করতে পারছে না এই ভাইরাস। শিশুদের ক্ষেত্রে শরীর খারাপের পাশাপাশি মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। বড়দের ক্ষেত্রে সেরকম কোনো ঝুঁকি নেই। তাঁদের মাইল্ড ইনফেকশন হচ্ছে।’’

বিশেষজ্ঞদের মতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুরা একসাথে জোড়া ভাইরাসের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। যেমন- অ্যাডিনো ভাইরাসের সঙ্গে রাইনো ভাইরাস বা মেটা নিমো ভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস।অনেক ক্ষেত্রে একটি ভাইরাসের আক্রমণ থেকে সেরে উঠতে না উঠতে আরেকটি ভাইরাস আক্রমণ করছে। তাই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস সহ ভাইরাস ককটেল , হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে শিশু রোগীদের ভিড়।