রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথায়, ‘বাসনার সেরা বাসা রসনায়।’ আর এই রসনার তৃপ্তি দেয় মাছের রাজা ইলিশ ।সে রাজা বা রাণী যাই হোক না কেন স্বাদের ব্যাপারে কিন্তু ইলিশের জুরি মেলা ভার। বর্ষার মরসুমে পাতে ইলিশ পড়বে না, তা আবার হয় নাকি? কিন্তু, করোনা পরিস্থিতিতে ইলিশ এখন বাড়ন্ত। তবে এর মধ্যেও মিলছে ২০০ টাকার ইলিশ! কি অবাক লাগছে তো! অবিশ্বাস্য লাগলেও এটাই সম্ভব করে তুলেছেন বাংলাদেশের মাছ ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সুলভে মাছ দিয়ে আসছেন তিনি।
ইলিশের মরসুম হলেও বাজারে ক্রেতার ব্যবসা মার যাচ্ছে ইলিশ বিক্রেতাদের। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই বাড়ি বাড়ি ইলিশ ফেরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খুলনার রূপসা এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন। প্রতি কেজি ইলিশের দাম মাত্র ২০০ টাকা। ৪০০-৫০০ টাকার ইলিশ অল্প দামে পেয়ে ক্রেতারাও খুশি। শুধু তাই নয়, রূপসা মাছের আড়তের এই মাছ ব্যবসায়ী সাতক্ষীরার তালা সদরের মাঝিয়াড়া বাজার এলাকাতে মাইকিং করেও জানাচ্ছেন তাঁর এই উদ্যোগের কথা। বাবুল হোসেন জানান, ঈদের আগে মাছগুলি কিনেছিলেন। তবে বিক্রি হয়নি। লকডাউনের মধ্যে বাজারেও ক্রেতার অভাব। তাই বাধ্য হয়েই ফেরি করে বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যসময় এই মাছই বিক্রি হয় ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি দরে।
এখন প্রতিদিন ৬০ কেজি করে মাছ নিয়ে ফেরি করছেন তিনি। খরচ বাদ দিয়ে ৬০০-৮০০ টাকা লাভ থাকছে বাবুলের। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার কাছে রয়েছে তিন টন ইলিশ মাছ । ইলিশ মাছগুলি চট্টগ্রাম থেকে এনেছিলাম। এগুলি সাগরের মাছ। মাছগুলি যাতে নষ্ট না হয়ে যায় সে কারণে এভাবেই বিক্রি করছি।’ রবিবার তালা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন বাবুল।
প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, বর্তমানে ৫০০-৮০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। ৮০০ গ্রামের উপরে ও এক কেজির নিচে বিক্রি হচ্ছে ৯০০-৯৫০ টাকায়। এ ছাড়া এক কেজির উপরের মাছের দাম তো আরও বেশি। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে যাবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি। এদিকে, রবিবার থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। ফেরি করে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রির বিষয়ে মশিউর রহমান বলেন, ‘এটি মূলত সাগরের মাছ। সে কারণে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়া লকডাউনের মধ্যে ক্রেতা সংকটও রয়েছে। নষ্ট না করে ব্যবসায়ী হয়ত অল্প দামে বিক্রি করে দিতে চাইছেন। তবে এই মাছের স্বাদ পদ্মার ইলিশের স্বাদের মতো হবে না।’