প্রদোষ ব্রতর সম্পর্কে অনেকেরই কোন রকম ধারণা নেই, তবে হিন্দু শাস্ত্র মতে এই ব্রতর একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। আরেকটি নাম ত্রয়োদশী ব্রত। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী প্রত্যেক মাসে দুটি করে প্রদোষ থাকে একটি শুক্লপক্ষে এবং আরেকটি কৃষ্ণপক্ষে। এই প্রদোষে শিব ঠাকুরের পুজো করার নিয়ম রয়েছে।
সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে রাত হওয়ার মধ্যে সময়টিকে বলা হয় প্রদোষ। হিন্দুশাস্ত্র ধর্ম এবং প্রচলিত ধারণা অনুসারে মনে করা হয় যে এই দিনে যদি শিবের পুজো অত্যন্ত নিষ্ঠা এবং শ্রদ্ধাভরে করা হয় তাহলে যেকোনো মানুষের মনের ইচ্ছা পূর্ণ হয়।
চলতি মাসে এই ব্রত পড়েছে ২৭ এ মে শুক্রবার জৈষ্ঠ্যে মাসের প্রথম প্রদোষ ব্রত। এই ব্রত সময়সীমা পড়েছে ১৭ মে সকাল ১১.৪৭ মিনিটে থেকে ২৮ শে মে দুপুর ১.০৯ পর্যন্ত। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী এই ব্রত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এইদিন শিবের পুজো করা হয় এবং এই পুজো যদি ভক্তি-শ্রদ্ধা করে করা হয় তবে দুঃখ কষ্ট দূর হয়।
পুরাণ অনুযায়ী কথিত রয়েছে যে এই ব্রত করলে দুটি গরু দান এর সমান পুণ্য লাভ করা যায়। যে ব্যক্তি এই ব্রত রাখেন তাঁর জীবনের সমস্ত পাপ থেকে তিনি মুক্তি লাভ করতে পারেন। জেনে নিন এই ব্রত পালন করার কি নিয়ম।
এই ব্রত করতে হলে সকালে উঠে স্নান করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পড়ে শিব ঠাকুরের পুজোয় বসতে হবে এবং এই পুজো করতে গেলে বেলপাতা, অখন্ড চাল, প্রদীপ এবং ধূপকাঠি প্রয়োজন।
এই ব্রত যেদিন হবে সেদিন উপবাস থেকেই করতে হবে। সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে স্নান করে নিয়ে আবার একটি সাদা পোশাক পরতে হবে এবং এরপর কোন স্থানে গঙ্গা জল দিয়ে শুদ্ধ করে নিয়ে আবার মন্দিরে গিয়ে শিবলিঙ্গের পূজা করতে হবে।
গরুর গোবর দিয়ে একটি মন্দির বানাতে হবে এবং উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে কুশের আসনে বসে এই পুজোর প্রস্তুতি নিতে হবে ।
এরপর শিবের মন্ত্র জপ করে করে জল দিতে হবে।
এই ব্রত দিনে কিছু কিছু কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে ।
এই ব্রত করে অবশ্যই উপবাস থেকে করতে হবে তবে ফল খাওয়া যাবে।
শিবলিঙ্গের পূজা করার পরই এই ফল আহার করা যাবে এই দিনে চাল, লাল লঙ্কা এগুলো খাওয়া যাবে না।
ফল খাওয়া ছাড়া আর কোন খাবারে খাওয়া যাবেনা। রসুন-পেঁয়াজ যুক্ত খাবার থেকে এই দিন নিজেকে বিরত রাখুন।