মালদা,১৮ সেপ্টেম্বর : শনিবার সকাল পর্যন্ত পালন করম উৎসব। মালদা জেলার হবিবপুর ব্লকের আইহো অঞ্চলের বড় আকালপুর এলাকায় প্রতিবারের ন্যায় এবছরও শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু হয় করম পূজার আয়োজন। একাদশী করম উৎসব ও ঝুমুর নাচ আয়োজন করল হবিবপুর ও বামনগোলার বেদিয়া সমাজের উদ্যোগে পিঁপড়াটোলা সামাজিক কল্যাণ সমিতির সদস্যরা।
এই সমাজের লোকেরা প্রকৃতির পূজারি। তাই এই করম পূজা উপলক্ষে পুরনো রীতি মেনে করম গাছের ডাল ও পাঁচ ধরনের শস্যের বিছনের ডালী দিয়ে পূজা অর্চনা করেন। প্রথমে তারা করম গাছের কয়েকটি ডাল কেটে নিয়ে আসেন এবং পাঁচ ধরনের শস্য বিছনের ডালিতে নিজেদের সংস্কৃতি মেনে পূজা অর্চনা করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঝুমুর নাচের শিল্পীরা নাচে অংশগ্রহণ করেন। ঝুমুর নাচের মধ্য দিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন তারা। শনিবার সকাল পর্যন্ত চলে এই ঝুমুর নাচের অনুষ্ঠান।
হবিবপুর -বামনগোলা ব্লক সহ মালদা জেলা তথা আশেপাশের জেলা থেকেও বেদিয়া সমাজের শিল্পীরা ঝুমুর নাচে অংশগ্রহণ করেন। আকলপুর পুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল ময়দানে শনিবার সকালে করম গাছের ডাল ও ৫ ধরনের শস্য বিছনের ডালি পাশের পুকুরে নিরঞ্জন করেন তারা । পিঁপড়াটোলা বেদিয়া সামাজিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন মাহাতো জানিয়েছেন এই কারাম পূজা পূর্বপুরুষের পুরনো রীতি মেনে পূজা করে আসছেন যাতে বেদিয়া সমাজ লুপ্ত না হয়, কর্মময় জীবনের ব্যস্ততা কাটিয়ে ভাদ্র মাসের প্রথম পূর্ণিমার চাঁদ দেখার ১১ দিনের মাথায় এই পূজা-অর্চনা করেন তারা।
এই পূজার মধ্য দিয়ে তাদের রীতিনীতি সংস্কৃতি জিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। তারা প্রকৃতির পূজারী তাই করম গাছে দুটি ডাল কেটে কারাম পূজা ও উৎসব করে থাকেন। এই বেদিয়া সমাজের করম পূজা যেহেতু কর্মা ও ধরমার নামে পূজা অর্চনা হয়ে থাকে সেহেতু বেদিয়া সমাজের নতুন প্রজন্মরা যাতে ধর্ম-কর্ম এই বিষয়টি সমানভাবে প্রচলিত হয়ে থাকে সেই জন্যই করম পূজা করে আসছেন তারা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, হবিবপুর বিধানসভার বিধায়ক জুয়েল মুর্মু ও পিঁপড়াটোলা বেদিয়া সামাজিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি সুশান্ত মাহাতো, সম্পাদক নিরঞ্জন মাহাতো সহ অন্যান্য অতিথিরা।