একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির হার কার্যত বঙ্গ বিজেপি শিবিরকে পুনরায় ভাবতে বাধ্য করেছে। বিজেপি’র শীর্ষ শিবিরের নেতাকর্মীরা বর্তমানে আত্ম সমীক্ষায় ব্যস্ত। বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায় আদ্যোপান্ত স্পষ্টবক্তা। স্পষ্ট কথা বলতে তিনি দ্বিধা করেন না। তার নিজস্ব আত্মসমীক্ষায় ধরা পড়েছে বেশ কিছু ত্রুটি যা একুশে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ব্যাকফুটে নিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ৬ টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন তিনি।
তথাগত রায়ের বক্তব্য অনুসারে, বিজেপির হিন্দিভাষী নেতাকর্মীদের কথা বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বুঝতে পারেননি। একদিকে যেখানে বাংলার মেয়ে স্লোগান দিচ্ছে তৃণমূল, অপরদিকে বিজেপির হিন্দিভাষী নেতাকর্মীদের প্রচার তাদের বহিরাগত হিসেবে রেখে দিয়েছে। বিজেপির দ্বিতীয় ভুল, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আদর্শকে বাংলার মানুষের সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা যায়নি। তিনি কেন বঙ্গভঙ্গ কে সমর্থন করেছিলেন, তা তুলে ধরা হয়নি।
তৃতীয় ভুল হিসেবে বাংলায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদারের মুখের অভাবকেই দুষেছেন তিনি। তার মতে লকেট চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় অথবা জয়প্রকাশ মজুমদারকেও যদি মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে সামনে রেখে লড়াই হতো, তা হলেও মানুষ বিশ্বাস রাখতেন বিজেপির উপর। চতুর্থ ভুল হিসেবে বিজেপি নেতা কর্মীদের অশালীন ভাষণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারমুডা পরতে বলা, মেরে শুইয়ে দেব, শব দেহের লাইন লাগিয়ে দেবো, এমন সব ভুল কথা বলাকে দায়ী করেছেন তিনি।
তথাগত রায়ের মতে বিজেপির পঞ্চম ভুল, সিএএ, এনআরসি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা। যে মানুষগুলো বাংলাদেশ থেকে অত্যাচারিত হয়ে ভারতে এসেছেন, তাদের মনে সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে ভুল বার্তা পৌঁছেছে। সঠিক প্রার্থী চয়নের ব্যর্থতাকে বিজেপির ষষ্ঠ ভুল হিসেবে মনে করছেন তথাগত রায়। দল-বদলুদের নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্তকে ভুল বলে মনে করছেন তিনি। একুশের লড়াইয়ে ১৪০ জন দল-বদলুদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো একদমই ঠিক হয়নি বলে তিনি মনে করেন।