“নতুন আশা, নতুন আলো, নতুন বছর কাটুক ভালো” সামনেই পয়লা বৈশাখ। বাংলা বছরের সূচনায় বাঙালিরা আনন্দ করবে না তা কখনো হয় নাকি! পয়লা বৈশাখের সকাল মানেই পরনে নতুন জামা। আর সেই সাথে লক্ষ্মী গণেশ পুজো। তারপরই হালখাতার আনন্দ। হাতে নতুন ক্যালেন্ডার। তার সঙ্গে মিষ্টির বাক্স আর পঞ্জিকার কম্বিনেশন অমোঘ।
তবে বর্তমানে পঞ্জিকার চাহিদা আর তেমন নেই বললেই চলে। প্রকাশকরা বলছেন, চাহিদার ধরণ এখন আর আগের মতো নেই, অনেক বদলে গেছে। চেনা মানুষকে যেমন দূর থেকে চেনা যায়, চেনা পঞ্জিকাও তাই। গুপ্তপ্রেসের ফিকে গোলাপি রঙের বেণিমাধব শীল। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্তের গাঢ় নীল।
ত্বকের রঙে মদন গুপ্তের ফুল পঞ্জিকা। পুরনো সেই কভারে হাত ছেড়ে তা এখন ঢুকে পড়ছে মুঠোফোনের স্টোরেজে। বার, তিথি, নক্ষত্র, যোগ, করণ–বারো মাসের প্রতিদিনের পাঁচরকম তথ্য দেখে এক ক্লিকে নেওয়া যাচ্ছে। গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকার পথ চলা শুরু হয়েছিল ইংরেজি ১৮৬৯ সালে।
তখন যা দাম ছিল তা এখন ভাবাই যাবে না, মাত্র দু’আনা। আর আজ তার দাম হয়েছে দু’শো টাকা। এখন বিয়ে হোক বা পুজো সবকিছুর শুভ দিনের তালিকা একেবারে হাতের সামনে।
আরো পড়ুন: মনোবিদকে ম’ন দিয়েছেন ঋতাভরী, স’ঙ্গী’কে নিয়ে ছবি দিতেই ম’ন ভা’ঙ’লো নায়িকার অনুরাগীদের
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকার কর্ণধার অরিজিৎ রায়চৌধুরীর কথায়, “আজকালকার চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত। গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকার PDF ভার্সন বেরিয়েছে নববর্ষে। দাম দু’শো টাকা। যাঁরা পিডিএফ ভার্সন নিচ্ছেন বইটা তাঁদের মুফতে দিচ্ছি।” বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার PDF এখনও মার্কেটে আসেনি।
দাম ঠিক হয়েছে দু’শো ত্রিশ টাকা। PDF প্রসঙ্গে কর্ণধার লাহিড়ীবাবু বলেন, “শীঘ্রই আসবে। PDF হওয়ার সুবাদে কানাডার প্রবাসী বাঙালিও বৈশাখের সকালে ভ্যাঙ্কুবারে বসে পঞ্জিকার সফট কপি ডাউনলোড করে নিচ্ছেন।”
এহেন PDF-এর অবশ্য বেশ কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে পূর্ণচন্দ্র শীল ডায়রেক্টরি পঞ্জিকার প্রকাশক জানিয়েছেন, PDF জনপ্রিয় হলেও কপিরাইট থাকছে না।
আরো পড়ুন: পয়লা বৈশাখে কি তু’মু’ল বৃষ্টি? জা’নি’য়ে দি’লো আবহাওয়া দপ্তর
কীরকম? পিডিএফ ভার্সন পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড হলেও লাভ হচ্ছে না। একজন কিনছেন, আত্মীয় পরিজনদের পাসওয়ার্ড বলে দিচ্ছেন। সমস্ত শুভ অনুষ্ঠানের সূচি তাঁরা সেখান থেকেই দেখে নিচ্ছেন।
তবে গোলাপি বইয়ের সঙ্গে দৌড়ে এখনও এঁটে উঠতে পারছে না Google বাবাজি। মেয়ের বিয়ে দেবেন বলে গুগল ঘেঁটে কার্তিক মাসে বিয়ের তারিখ ঠিক করেছিলেন নাগেরবাজারের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ পোড়েল মহাশয়। নিশ্চিত হওয়ার জন্য পঞ্জিকার সঙ্গে মেলাতে গিয়ে দেখেন সর্বনাশ!