Home রাজ্য মাল’দহের রতুয়া’য় ভ’য়া’ব’হ অ’গ্নি’কা’ণ্ডে ভ’স্মী’ভূ’ত ১০টি পরিবারে’র প্রা’য় ২৩ টি বাড়ি

সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

মাল’দহের রতুয়া’য় ভ’য়া’ব’হ অ’গ্নি’কা’ণ্ডে ভ’স্মী’ভূ’ত ১০টি পরিবারে’র প্রা’য় ২৩ টি বাড়ি

মালদহের রতুয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত ১০টি পরিবারের প্রায় ২৩ টি বাড়ি

রতুয়া, ১১ ফেব্রুয়ারি : ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত ১০ টি পরিবারের প্রায় ২৩ টি বাড়ি। শুক্রবার সকাল সাড়ে নটা ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত খাকশাবোনা এলাকার নয়াবিলাইমারি গ্রামে। সরকারি সহযোগিতার আশ্বাস ব্লক প্রশাসনের।

জানা গিয়েছে, রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নয়াবিলাইমারি গ্রামের বাসিন্দা সাহাআলামের রান্নাঘরে প্রথমে আগুন লাগে এরপর প্রতিবেশী আনিসুর রহমানের ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে মুহুর্তের মধ্যে প্রায় আরও আটটি বাড়িতে আগুন লাগে। ঘটনার খবর দেওয়া হয় চাঁচল দমকলে। তবে দমকলের অপেক্ষায় না বসে থেকে গ্রামবাসীরা নিজেরাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাই। তবে আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল মুহূর্তের মধ্যে একের পর এক বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

অবশেষে গ্রামবাসীদের প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।তবে ততক্ষণে পুড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা ছড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের এখনো পর্যন্ত কোন সরকারি সহযোগিতা মেলেনি। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কেউ ভিন রাজ্য শ্রমিক তো কেউ আবার দিনমজুর। খোলা আকাশের নিচে দিন গুজরান করতে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের। সরকারি সহযোগিতার অপেক্ষায় তাকিয়ে রয়েছে ওই পরিবারগুলো।

স্থানীয় বাসিন্দা ইনজামুল হক জানিয়েছেন এই এলাকায় আগুন লাগার ঘটনা নতুন কোন কিছু নয়। আগুন লাগার ঘটনা হামেশাই ঘটে থাকে। আজ সকালে সাহাআলামের রান্নাঘরে প্রথমে আগুন লাগে এরপর সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা পাড়ায়। প্রায় ১০ টি পরিবারের ২৩ টি বাড়ি আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। খবর দেওয়া হয়েছিল চাঁচল দমকলে তবে দমকলের ইঞ্জিন সময়মতো এসে পৌঁছাতে পারেনি। আমরা গ্রামবাসীরা নিজেদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনি। তবে আর শেষ রক্ষা হয়নি। এই পরিবারগুলি সর্বস্ব খুইয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে দিন গুজরান করছেন। বাড়ির আসবাবপত্র থেকে শুরু করে টাকা পয়সা অলংকার, প্রয়োজনীয় নথিপত্র সবকিছুই আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিদুর আনোয়ার জানিয়েছেন রতুয়া -১ ব্লকের মহানন্দাটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রতিবছর আগুন লাগে। ২০০৭ সালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নয়া বিলাইমারিতে ৪৫০ টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই ভয়াবহ দৃশ্য এখনো গ্রামবাসীদের মনের মধ্যে টাটকা হয়ে আছে। আবার পুনরায় একই ঘটনা ঘটেছে। তবে কাছাকাছি দমকল কেন্দ্র না থাকার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি ছড়াচ্ছে। চাঁচল ও মালদা শহর থেকে দমকলের ইঞ্জিন এখানে পৌঁছাতে প্রায় দু,ঘন্টা সময় লাগে, ততক্ষনে সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। প্রতিবছর নির্বাচনের সময় এলাকায় এসে বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রীরা রতুয়ায় দমকল কেন্দ্র গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান, তবে ভোট ফুরোলে তাদের আর দেখা মেলে না। আমাদের এলাকার তিন বারের বিধায়ক সমর বাবু এলাকার মানুষকে বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিন্তু কোন কাজ করেননি। আমাদের এলাকাবাসীর বহুদিনের দাবি রতুয়ায় জন্য একটি অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্র স্থাপিত হোক।

এদিকে আগুন লাগার খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণ সাহা। তিনি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আপাতত ত্রিপল, কম্বল ও কিছু শুখনো খাবার দিয়ে সহযোগিতা করা হবে। এবং আগামী দিনে ওই সমস্ত পরিবারগুলিকে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

রতুয়ার-১ ব্লকের বিডিও রাকেশ টোপ্পোকে ধরা হলে তিনি জানান মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়া বিলাইমারিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। শুনেছি বেশ কিছু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে লোক পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে খুব শীঘ্রই ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।