রেললাইনে রাতের বেলায় কাজ চলার সময় হঠাৎই কর্মরত ঠিকাদার কর্মীরা দেখতে পান যে, ওই লাইন ধরে ছুটে আসছে ট্রেন। এদিকে লাইনের উপর রাখা লোহার ভারী রেলট্র্যাক। দুর্ঘটনা এড়াতে তড়িঘড়ি সেই লোহার ট্র্যাক সরাতে যান কর্মরত ঠিকাদার কর্মীরা। কর্মরত এক যুবকের তখনই ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়। হতে পারত বড়সড় বিপদ। কিন্তু নিজের জীবন দিয়ে ট্রেনটিকে ‘বাঁচিয়ে’ দেন অনুপ মুন্ডা নামে ওই যুবক। ডামডিম গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমলাই চাবাগান এলাকায় বাড়ি মৃত অনুপ মুন্ডার।
জানা গিয়েছে, মালবাজার মহকুমার ওদলাবাড়ি রেলস্টেশন সংলগ্ন আন্ধাঝোড়া রেলসেতুর কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সোমবার রাত ৯টা নাগাদ ধুপড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। রাতেই রেল পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। তবে এই মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতের বেলায় রেললাইনে কাজ চলছে, অথচ পর্যাপ্ত কোনও আলোর ব্যবস্থা ছিল না। অন্ধকারের মধ্যে ঠিকদার কর্মীরা কীভাবে রেললাইনে কাজ করছিল? কেন রেলের কোনও আধিকারিক সেইসময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না? রেলের আধিকারিক না থাকার পরেও কীভাবে ঠিকাদার কর্মীরা রেলট্র্যাক খুলছিলেন? প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।
তাঁদের অভিযোগ, একসঙ্গে প্রায় ১০-১২ জন ঠিকাদার কর্মী রাতের অন্ধকারে ভারী জিনিস নিয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু রেলের তরফে তাঁদের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা-ই ছিল না। এমনকি ট্রেনটিও দুর্ঘটনাগ্রস্থ হতে পারত। কারণ যে লাইনে কাজ চলছে, সেই লাইনেই ট্রেন চলে আসে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, আন্ধাঝোড়ার কাছে রেললাইনের মাঝ থেকে ট্র্যাক খোলা হচ্ছিল। বেশকিছু ট্র্যাক খুলে পাশে রাখাও হয়ে গিয়েছিল। এখন একটি লোহার ট্র্যাক খুলে প্রথম অবস্থায় লাইনের উপরই রেখেছিলেন ঠিকাদার কর্মীরা। হঠাৎ-ই তাঁরা দেখতে পান যে, মালবাজারের দিক থেকে দ্রুত গতিতে ছুটে আসছে ধুপড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। দেখামাত্র তড়িঘড়ি লাইনের উপর থেকে ওই ভারী লোহার ট্র্যাক সরাতে যান ঠিকাদার কর্মী হিসেবে কর্মরত অনুপ মুন্ডা। তখনই ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় তাঁর।