অনেকেই আছেন যাদের কালসর্প দোষ থাকে, কিন্তু কালসর্প দোষ এবং সর্প দশার সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। এই দুটি একেবারেই আলাদা বিষয়। শাস্ত্র মতে, সর্প দেবতা উষ্মা এবং অত্যান্ত ক্রোধের কারণে ব্যক্তির জীবনের সর্প দশার সূচনা হয়। এই দশার প্রভাব থেকে যদি মুক্তি পেতে চান, তাহলে কিছু অভ্যাস এখন থেকেই আপনাকে শুরু করতে হবে।
হিন্দু শাস্ত্র মতে সর্বদেবতা বর্ণনায় সাপের মাথার দিকটা কেতু এবং লেজের অংশ রাহু বলে বর্ণনা করা হয়েছে। রাহু উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং বিশৃঙ্খলার প্রতীক। অন্যদিকে কেতু ক্রোধ থেকে পরিত্রাণের প্রতীক।
জন্মসূত্রে রাহু জাতিকারা পরিছন্ন থাকতে এবং স্বাবলম্বী হতে পছন্দ করেন। সাধারণত বিয়ের পরেও অন্য পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয় এনারা। এদের মধ্যে বৈধব্য অথবা ডিভোর্স যোগ বেশি দেখা যায়।
অপরদিকে রাহু জাতকরা কামুক এবং স্বার্থপর প্রকৃতির হন। সহধর্মিনীর প্রতি খুব একটা বিশ্বস্ত হন না এরা। বিবাহ পরবর্তী জীবনে স্ত্রী হারানোর অথবা ডিভোর্স হওয়ার প্রচন্ড পরিমানে সম্ভাবনা থাকে এদের।
নাগ দশা ঘটার কারণ:
মৃত ব্যক্তির দেরি করে শব দাহ হলে অথবা অচেনা ব্যক্তি দ্বারা শব দাহ করা হলে এমন হতে পারে।
আত্মহত্যা অথবা খুন হলে।
পূর্ব পুরুষেরা ভ্রুণ অবস্থায় কোন শিশুকে হত্যা করলে।
সর্প দশার প্রভাব:
এই দশার প্রভাব থাকলে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করা যেতে পারে।
চন্ডাল যোগ নিবারণ পুজো করা যেতে পারে যেটা বৃহস্পতি রাহু অথবা কেতুর গুন বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
১১ মুখী রুদ্রাক্ষ মালা ধারণ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
দরিদ্র ব্যক্তি অথবা বয়স্কদের সম্মান করতে হয়।
এই প্রভাব থাকলে বৃহস্পতিবার অথবা চন্দ্রগ্রহ মন্ত্র জপ করলে ভালো হয়।
গুরুচন্ডাল শান্তি যজ্ঞ অনুষ্ঠান করলে ফল ভালো পাওয়া যায়।
গুরুচণ্ডালী মুক্তি কবজ ধারণ করা যেতে পারে ভালো ফলাফলের জন্য।
প্রতিকার:
এই দশার প্রভাব থাকলে ষষ্ঠী তিথিতে সর্প পরিহার পুজো করার পর স্নান করে পরিশুদ্ধ হতে হয়।
প্রতিদিন শিবলিঙ্গে জল এবং দুধ ঢালা উচিত।
১০৮ বার ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করা উচিত।
কপালে চন্দনের প্রলেপ দেওয়া উচিত।
১৮ সপ্তাহের প্রত্যেক মঙ্গলবার এবং শনিবার সর্প দেবতার মূর্তি পূজা করা উচিত।
ধাতুর পাত্রে সরষের তেল এবং কাজল গুলে জলে ভাসিয়ে দেওয়া উচিত।
হাতের মধ্যমায় রুপোর আংটি ধারন করা উচিত।
কি করা উচিত নয়:
একাদশী অথবা শিবরাত্রি কোনটাই উপবাস করে করা উচিত নয়।
গৃহ পূজা করা যায় না।
পূজার সময় বাড়ির সকলকে উপস্থিত থাকতে হয়।
ঋতুমতী এবং গর্ভবতী মহিলাদের সর্প মন্দিরে প্রবেশ করা উচিত নয়।