সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

শাস্ত্রমতে কিভাবে মা লক্ষ্মীর আরাধনা করলে হয় লক্ষ্মীলাভ? জেনে নিন স’ঠি’ক নি’য়’ম

প্রত্যেকেরই অভিপ্সা, মা লক্ষ্মী যেন তার বাড়িতে স্থায়ী ঘর করে থাকেন। মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদে আপনার জীবন সৌভাগ্যে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এককথায় ধন-সম্পত্তি ও সৌভাগ্যের দেবী লক্ষী। প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষী দেবীর আরাধনা করা হয়। তাই বাংলায় এই দিনটি লক্ষ্মীবার নামে পরিচিত। খুব শান্তভাবে সব নিয়ম মেনে মায়ের আরাধনা করলে মা বিশেষ সন্তুষ্ট হন। হিন্দুশাস্ত্র মতে মা লক্ষ্মীর পুজো করলে পরিবারের মঙ্গল হয়, এবং ঘরে অন্ন, অর্থ ও সৌভাগ্য কোনোকিছুর অভাব থাকে না।

প্রায় সব হিন্দু ঘরেই লক্ষ্মী মায়ের আরাধনা করা হয়। প্রতি বৃহস্পতিবার নিয়ম নিষ্ঠা সহকারে পুজো করলে মা লক্ষ্মী যদি সন্তুষ্ট হন, তাহলে সংসারে কোনো কিছুর অভাব থাকে না। ঘরবাড়ি বিপুল পরিমাণ ধন সম্পত্তিতে ভরে ওঠে। শাস্ত্র মতে সঠিক নিয়মকানুন মেনে কিভাবে মা লক্ষ্মীর আরাধনা করা উচিত- সেটিই আজকের প্রতিবেদনের বিষয়। তাই দেরী না করে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনিও পেতে পারেন মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ।

প্রথমত, লক্ষ্মী পুজোর উপকরণে কোনরকম ত্রুটি থাকলে চলবে না। তাতে মা রুষ্ট হন। মা লক্ষ্মীর পুজোর ফর্দে যে উপকরণগুলি থাকে সেগুলি হল, সামান্য সিঁদুর, একটি ঘট, কয়েকটি ধান, অল্প মাটি, একটি আমপল্লব, ফুল, কয়েকটি দুর্বা, ফল, মিষ্টি, একটি হরীতকী, সাদা ও লাল চন্দন, ধূপ, প্রদীপ, নৈবেদ্য, সামান্য আতপচাল ও জল। হিন্দু শাস্ত্রে এই সমস্ত উপকরণের উল্লেখ আছে।

দ্বিতীয়ত, লক্ষ্মী পুজো করার আগে পুজোর সঠিক নিয়ম জেনে নেওয়া আবশ্যক। সঠিক নিয়ম মেনে পুজো করলে দেবী তুষ্ট হন। মায়ের আরাধনা শুরুর আগে মা লক্ষীকে নিজের ঘরে আহ্বান জানাতে হয়। মা লক্ষ্মীর পুজো শুরু করার আগে, হাতে সামান্য গঙ্গাজল নিয়ে ‘নম বিষ্ণু’ তিনবার বলে জলটি পান করে নিন। শাস্ত্রমতে, যেকোনো পুজোর আগে সূর্যের উদ্দেশ্যে সামান্য জল উৎসর্গ করতে হয়। নিজের পাশে একটি তামার পাত্রে রেখে সেখানেই জল সূর্যের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে হবে। এরপর সামান্য ধান ও অল্প মাটি নিচে রেখে লক্ষ্মীর ঘট স্থাপন করতে হবে। ঘটের গায়ে সিঁদুর দিয়ে মঙ্গলচিহ্ন আঁকতে হবে। তার ওপরে আম পল্লব, কলা বা হরীতকী ও ফুল দিয়ে ঘট সুন্দর ভাবে সাজিয়ে নিতে হবে।

এরপর লক্ষীর নৈবেদ্য ও জলে একটা করে ফুল ছড়িয়ে দিতে হবে। তারপর মাকে সন্ধ্যা প্রদীপ দেখিয়ে মায়ের কপালে চন্দনের ফোঁটা ও পায়ে কয়েকটা ফুল অর্পণ করে আরাধনা করতে হবে।আরাধনার শেষে মাকে ভক্তি ভরে প্রণাম করে হাতে কয়েকটা দুর্বা নিয়ে লক্ষ্মীর ব্রতকথা বা লক্ষ্মীর পাঁচালি পাঠ করুন। শাস্ত্রমতে জলপূর্ণ ঘটে আমপল্লব সহযোগে পুজো করলে মা লক্ষ্মী অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন ৷ মায়ের কৃপা সম্পূর্ণ রূপে পাওয়া যায় যদি প্রতি বৃহস্পতিবার মা লক্ষ্মীর পাঁচালি সহযোগে আরাধনা করা যায় ৷

মা লক্ষ্মীর পুজোর দিনে কখনই আওয়াজ করা উচিৎ নয়, মা লক্ষ্মীর পুজোয় শুধুমাত্র ঘণ্টা বাজানো উচিৎ কাঁসর মোটেও নয় ৷ প্রচলিত আছে লক্ষ্মীপুজোর দিন বেশি আওয়াজ করলে মা লক্ষ্মী বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান ৷ তাই শান্ত ও স্নিগ্ধ পরিবেশে মায়ের আরাধনা করলে সুফল পাওয়া যায় ৷ মূলত সন্ধ্যেবেলায় মা লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। মা লক্ষ্মী নারায়ণের স্ত্রী বলে তাকে কোনদিনও তুলসী পাতা দিতে নেই। লোহা দিয়ে অলক্ষ্মী পূজা করা হয়। তাই লোহা বা স্টিলের জিনিস লক্ষ্মীপূজায় ব্যবহার করতে নেই। লক্ষ্মী পুজোর সময় মঙ্গল ঘটের পাশে অবশ‍্যই দেবীর পায়ের আল্পনা আঁকতে হবে। আল্পনা সহযোগে মায়ের পুজো দিলে মা অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন৷