সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

বাঙালীর প্রি’য় বিরিয়ানীতে কিভাবে ঢু’ক’লো আলু?

বিরিয়ানির প্লেটে আলু নেই!! এ কি করে সম্ভব? বাংলার বাইরে গেলে অবশ্য বিরিয়ানিতে আলুর দেখা মেলে না। তাই বিরিয়ানি যত ভালোই হোক না কেন, আলু ছাড়া বাঙালির বিরিয়ানিতে যেন মন ভরে না। তা বাঙালির বিরিয়ানিতে আলু এল কোথা থেকে? তা নিয়ে আছে এক গল্প। কথাতেই আছে,খাদ্যরসিক বাঙালি। তাই ছুটির দিনে পেটপুরে খাওয়াদাওয়াই হোক কিংবা গেট টুগেদার, এক প্লেট বিরিয়ানি হলেই একেবারে কেল্লাফতে। সত্যিই আর কোনো কিছু লাগেনা। বাঙালি মানুষ বিরিয়ানি ভালোবাসে না এমন মানুষের সংখ্যা সত্যিই খুব কম। ভরপুর গন্ধ, ঝরঝরে সুগন্ধি চাল, তুলুতুলে মাংসের এই নবাবি খানাটি বাঙালির খুব প্রিয়। আর, সেই বিরিয়ানির স্বাদ আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় আলু। আলু ছাড়া বাঙালির কাছে বিরিয়ানি যেন অর্থহীন। ঠিক যেন দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতন ।

কিন্তু মজার বিষয় হল, বাংলার বাইরে বিরিয়ানির প্লেটে আলু কিন্তু কোনো চিহ্ন মাত্র নেই। আসল ব্যাপারটা হল বিরিয়ানিতে কোনোদিনই আলু দেওয়া হত না । বিরিয়ানি মানেই সেখানে বহাল তবিয়তে মাংস থাকবে এমনটাই ছিল ধরণ। বরং এই আলু যোগকে বলা যায় বিরিয়ানির বাঙালিকরণ। আর, বিরিয়ানিতে আলুর আমদানি ঠিক কবে হল তার পিছনেও আছে এক গল্প।এমনিতে আজ বিরিয়ানি যতই অভিজাত খানা হোক না কেন, আসলে জিনিসটি একসময় তৈরি হয়েছিল গরিব শ্রমিকদের খাওয়ার জন্যই। কি, অবাক হচ্ছেন! হ্যাঁ, আজকে আমরা যেরকম বিরিয়ানি খাই, শুরু তে ছবিটা অবশ্য এরকম ছিল না।

বিরিয়ানি র এই ব্যাপক মাত্রায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পিছনে কৃতিত্ব রয়েছে আওয়াধের নবাব আসফ-উদ-দৌলার। তখন বড়া ইমামবড়া তৈরির কাজ চলছে। প্রায় কুড়ি হাজার শ্রমিক নির্মাণের কাজ করছিলেন সেখানে। তাঁদের ভরপেট খাবার দেওয়ার জন্য এমন একটি খাবারের পরিকল্পনা করা হল, যেখানে চাল, মাংস, সবজি ইত্যাদি সব একসঙ্গেই থাকবে। খাবারটি দমে রান্না করা হবে। ধীরে ধীরে যখন সেই রান্না হত, তখন তার সুন্দর গন্ধতে ভরে উঠতো চারিদিক। একদিন কাজ পরিদর্শনে এসে নবাবও পেলেন সেই ঘ্রাণ। কৌতূহলী হয়ে তিনি এ ব্যাপারে জানতে চাইলেন।আর তারপরেই বিরিয়ানি এন্ট্রি নিল নবাবের বাবুর্চিখানায়।

খাবারটি বাংলায় এল নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের হাত ধরে। আর তখন থেকেই বিরিয়ানিতে মাংসের সঙ্গে আলু যোগ করা হল। রন্ধন-সংস্কৃতির কাজে যাঁরা যুক্ত আছেন, তাঁদের কারো কারো মতে, নবাবি খরচে তখন সামান্য টান পড়ায় মাংসের সাথে সাথে আলুও জায়গা করে নিয়েছিল বিরিয়ানির হাঁড়িতে।। যদিও নবাবের বংশধররা মাসোহারার অঙ্ক উল্লেখ করে পরবর্তীতে জানিয়েছিলেন, এ সিদ্ধান্ত ঠিক হতে পারে না। তাহলে, আলু ঢুকে পড়ল কীভাবে? তার রহস্য আজ ভেদ হয়নি।