ঈশ্বর যাকে বাঁচায় তাকে কে মারে? হ্যাঁ প্রবাদ বাক্যটি আমাদের সবারই জানা,সেটাই বাস্তব এবার দেখা গেল। আমরা সব সময় টিভির পর্দাতেই বিভিন্ন নায়কদের দেখেছি যারা নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে অন্যদেরকে বাঁচায়, তবে বাস্তবে সেরকম নায়ক আমাদের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে আছে তা কিন্তু বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
প্রত্যেকদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ রেলপথের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যান, তবে এই রেলের মাধ্যমেও যে অনেক বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে সেটাও হয়তো আমরা প্রত্যেকেই জানি। তার জন্যই প্রতিনিয়ত রেলকর্মীরা নজর রাখেন যাত্রী এবং রেল পথের ওপর।
সম্প্রতি হাওড়া স্টেশনে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে যেটির সাক্ষী রয়েছে গোটা হাওড়া বাসি। নিজের জীবন বাজি রেখে এক রেলকর্মী বাঁচিয়েছেন এক যুবক সহ তার শিশুপুত্রকে। এই নায়কের নাম আরপিএফ কনস্টেবল অমিত কুমার বারি।
আরো পড়ুন: অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও টা’কা’র পাহাড়!
যদিও এই বিষয়ে অমিত কুমারের কিন্তু কোনো হেলদোল নেই। তার মতে,” এটা এমন কিছু ব্যাপার নয়, ওটাই হল আমাদের কাজ”। ঘটনাটি ঘটেছে সকাল দশটা কুড়ি পাঁশকুড়া লোকাল হাওড়া স্টেশনের ১৩ নম্বর প্লাটফর্মে।
ঘটনাটিতে দেখা যায় প্লাটফর্ম থেকে ট্রেন ছেড়ে যেতেই হঠাৎ করে লোকজন চিৎকার করে ওঠে, দেখা যায় যে একজন দম্পতি চলন্ত ট্রেনে বাচ্চা কোলে করে নিয়ে উঠার জন্য তৎপর হয়েছেন।
এই ঘটনাটিতে দম্পতির মধ্যে স্ত্রী ট্রেনের মধ্যে উঠে পড়লেও স্বামী কিন্তু পারেনি উঠতে, ঝুলে ছিলেন কামরার হ্যান্ডেল ধরে কোলে বাচ্চা নিয়ে। ট্রেন চলতে চলতে নিজের ভর সামলাতে না পেরে অবশেষে তিন বছরের সন্তানকে কোলে ধরেই পড়ে যান প্লাটফর্মে।
গড়াতে থাকে ট্রেন এবং প্ল্যাটফর্মের মধ্যের ফাঁকে। ওই যুবক এবং তার সন্তানের মর্মান্তিক পরিণতি হবে এই কথা ভেবেই আঁতকে ওঠে সেখানের জনতা। তারই মধ্যে হঠাৎ করে নায়কের মত এন্ট্রি হয় অনিল কুমারের।
এসে টান মারে সেই যুবক এবং তার সন্তানকে সরিয়ে নিয়ে আসে প্ল্যাটফর্মের ধার থেকে যার কারণে তারা মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। এরপরেই মিলিয়ে দেওয়া হয় মায়ের সঙ্গে সন্তানকে এবং তার স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীকে। যার পরেই নিজের ডিউটি শেষ করেন অমিত কুমার।
ইতিমধ্যে অমিত কুমারকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ জন,এরকমভাবে নায়কের মত দুটি প্রাণ বাঁচানোর জন্য। অমিত কুমারের এ ধরনের কাজের জন্য খুশি কর্মকর্তারাও।
আইজির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এরকম একটি দায়িত্ব পালন করার জন্য অমিত কুমারকে ২০০০ টাকা হিসেবে পুরস্কার দেওয়া হবে। অমিত কুমার এই কর্মে নিযুক্ত হয়েছেন ৪ বছর। জীবনে এটি প্রথম অভিজ্ঞতা। তার ভাষায়,” তিনি যে দুটো প্রাণ রক্ষা করতে পেরেছেন এটাই তার ভালো লাগছে ।