২২ এবং ২৩ তারিখ পালিত হচ্ছে ধনতেরাস, ২২ তারিখের সন্ধ্যেবেলা ত্রয়োদশী তিথিতে এবং থাকবে ২৩ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত। কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের তিথিতেই পালিত হয় ধনতেরাস। কাল দু’দিন আগেই এই দিনটি পালিত হয় এই দিনে যদি কোন কিছু কেনাকাটা করা হয় তাহলে সৌভাগ্য লাভ হয়। শাস্ত্রমতে বলা হয় যে এই দিনে মা লক্ষ্মীর সমুদ্রমন্থনের সময় হাতে ঝাঁপি নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন, সেই জন্যই এই দিনটিকে বলা হয় ধনতেরাস।
এই দিনে সোনা, তামা, রুপা, পিতল যদি কেনা হয় তাহলে সেটা শুভ বলেই মনে করা হয়। শাস্ত্র মতে এই ঋণ যদি কোন কিছু কেনাকাটা করা হয় তাহলে আপনার সম্পদ বেড়ে যাবে ১৩ গুণ। পুরাণে কথিত রয়েছে যে ধনতেরাস এমন একটা দিন যেটা ১২ বছর পর পর মানুষের জীবন বদলে দেয়। এবার আসুন জেনে নেই পুরাণের এই বিষয়ে কাহিনী।
পুরাণের কাহিনী অনুযায়ী একবার বিষ্ণু পৃথিবীর দিকে আসছিলেন, সেই সময় মা লক্ষ্মী তার সঙ্গে আসার জন্য আবেদন করেছিলেন কিন্তু, বিষ্ণুদেব সেই সময় জানিয়েছিলেন যদি তিনি বিষ্ণুদেবের কথা মেনে চলেন তবে তিনি বিষ্ণুদেবের সঙ্গে আসতে পারবেন। মা লক্ষ্মী জানান যে, তিনি বিষ্ণুদেবের সমস্ত কথা মানবেন।
আরো পড়ুন: বাজারে আ’স’ছে Royal Enfield 450, নতুন কি কি থাকছে বাইকে?
পৃথিবীতে যখন মা লক্ষ্মীকে নিয়ে বিষ্ণুদেব আবির্ভূত হলেন সেই সময় একটা জায়গায় মা লক্ষীকে রেখে দিয়ে বিষ্ণুদেব জানালেন, যে তিনি যতক্ষণ না পর্যন্ত আসবেন ততক্ষণ পর্যন্ত যেন মা লক্ষ্মী এই জায়গাতেই থাকেন।
এই বলে তিনি চলে যান দক্ষিণ দিকে। দক্ষিণ দিকে বিষ্ণুদেব কেন গেলেন সে বিষয়ে কৌতুহল হয় মা লক্ষ্মীর। মা লক্ষ্মী এই কারণে বিষ্ণুদেবকে অনুসরণ করেন। কিছুদুর যাওয়ার পর এই সরষেক্ষেত দেখতে পান সেই সর্ষেফুল দিয়েই তিনি সেজে ওঠেন। এরপর যান আখের খেতে সেখানে অখের রস খান। এর পরে সেই স্থানে পৌঁছে যান বিষ্ণুদেব।
লক্ষী মাকে দেখে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে যান। এই অবস্থায় বিষ্ণুদেব মা লক্ষীকে রাগ হয়ে অভিশাপ দেন যে, ১২ বছর তিনি কৃষকের ঘরে থেকেই সেবা করবেন। এই বলে বিষ্ণুদেব চলে যান, আর মা লক্ষ্মী কৃষকের ঘরে থেকে যান। মা লক্ষ্মীর অবস্থানের ফলে সে কৃষকের ঘর সম্পদে ভরে যায়।
অবশেষে মা লক্ষীকে ১২ বছর পর বিষ্ণুদেব ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আসে, তখন কৃষক তাকে কিছুতেই যেতে দিতে চাইনি। সেই সময়ে সেই কৃষককে মা লক্ষ্মী বলেন যে, ধনতেরাসের দিনে ঘর পরিষ্কার করে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে তার পুজো করে একটি তামার পাত্রে অর্থ রাখলে তিনি আবার এই জায়গাতেই ফিরে আসবেন। তারপর থেকে মনে করা হয় যে ১২ বছর পরপর মা লক্ষ্মী মর্তে নেমে আসেন।