ববিতা অঙ্কিতা এবং অনামিকা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির একেবারে প্রথমেই উঠে আসে এই তিনজনের নাম। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সূচনা হয়েছিল পরেশ অধিকারীর হাত ধরে তিনি তার মেয়েকে নাকি বেআইনিভাবে চাকরি দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য চাকরি চলে যায় পরেশ কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর।
এরপর নিয়োগ দুর্নীতি আন্দোলনের অন্যতম মুখ ববিতা সরকার চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই চাকরিও চলে গেল মাত্র ছয় মাসের মাথায়। সুখ যেন সহ্য হলো না ববিতার। আর জয় হল ন্যায়র চাকরি পেলেন অনামিকা। ২০১৬ সালের নবম দশম শিক্ষক নিয়োগে প্যানেলে বিচারের যোগ্য প্রার্থী ছিলেন তিনি।
শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা নম্বরের ভুলের তথ্য খাড়া করেছিলেন আদালতে। সেই থেকে এবার চাকরি চলে এলো তার হাতে। এদিন রায় শুনে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন ১০ কিলোমিটার এর মধ্যে যে কোন স্কুলে দুসপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আট বছর ধরে একটা বেসরকারি স্কুলে চাকরি করেছি আমি অবশেষে আমার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। সেই সঙ্গে তিনি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অনামিকা বলেন আমি স্কুলে যেতে পারবো এর থেকে বড় খুশির খবর আমার কাছে কিছু নেই।
এদিকে ববিতা এতদিন যা মাইনে পেয়েছেন সব অনামিকাকে দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও অনামিকার স্পষ্ট দাবি ওই মাইনে নিয়ে কি করবো আমি। জানুয়ারি মাসে কমিশনের ভেরিফিকেশনের ভুলে ববিতা সরকার চাকরি পেয়েছিলেন।
অথচ অনামিকা জানান এসএসসির নিয়ম অনুযায়ী মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক ও গ্রাজুয়েশনের কোয়ালিফিকেশনের উপর কিছু নম্বর ধার্য করা হয়। সেই নম্বরে কিছু গরমিল রয়েছে। ববিতার এডুকেশনাল স্কোর ৩১! অথচ কমিশনের তৎপরতায় তার নম্বর কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
স্নাতকের ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেয়েছিলেন বলে দাবি করেন ববিতা কিন্তু আদতে তিনি ৫৫ শতাংশ নম্বর পান। এই ভুলের যে রেংকিং এর ক্ষেত্রে তার থেকে কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন অনামিকা। তারপরে তার নাম বাতিল করে ববিতা সরকারের নিয়োগ হয়। লড়াইটা কিন্তু জারী রেখেছিলেন অনামিকা।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষিকা হিসেবে ৪৩ মাসের মাইনে পাবেন অনামিকা যার পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ ৯২ হাজার ৮৪২ টাকা। আসলে এই টাকা যার হাতে ছিল তিনি হলেন পরের অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী, যিনি মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করেছেন।