আজকাল মানুষ এতটাই স্বার্থপর হয়ে উঠছে যে নিজেরটুকু ছাড়া আর কিছুই বোঝে না,বলা ভালো বুঝতেই চায় না। কী প্রসঙ্গে কথাটা বললাম ভাবছেন নিশ্চয়?? তাহলে শুরু করা যাক। করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতির স্বীকার অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে একই সঙ্গে কাজ হারিয়েছিলেন বাবা-ছেলে। কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না বৃদ্ধ। সেই সময়েরই সুযোগ নিল তাঁর গুণধর ছেলে। বৃদ্ধ বাবার জমানো টাকাই শুধু নয়, বাড়ি বিক্রি করে সমস্ত সম্পত্তি টাকাপয়সা নিয়ে চম্পট দিল ছেলে । অসহায় বৃদ্ধ এখন রাস্তার পাশে প্রতিক্ষালয়ে রাত্রী যাপন করছেন। খেতে না পেয়ে শরীর জীর্ণজরা হয়ে উঠছে দিন দিন, বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। ঘটনাটি ঘটেছে মালবাজার মহকুমার ওদলাবাড়ি ডিপো পাড়া এলাকায় । ওদলাবাড়ির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সাহায্যে অসহায় ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
বৃদ্ধের নাম রামচন্দ্র কানু। তিনি বলেন, “আমি ওদলাবাড়ি একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতাম। কিন্তু লকডাউনের জেরে আমার আর ছেলের দুজনেরই কাজ চলে যায়। তাই একদিন ছেলে আমাকে বলল বাড়ি বিক্রি করে শিলিগুড়ি যাওয়ার কথা। সেখানে অন্য দোকানে দু’জনেই কাজ করব। আমার কাছে যে কটা টাকা ছিল, তাও ছেলে নিয়ে নেয়। ছেলের কথায় বাড়ি বিক্রিতে সম্মতি দিয়ে দিই কারণ আমি ভেবেছিলাম শিলিগুড়ি গেলে হয়তো ভালো কাজই পাবো। কিন্তু গত ১ মাস আগে বাড়িঘর বিক্রি করে ছেলে এবং ছেলের বউ আমাকে প্রতিক্ষালয়ে বসিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছে। তাঁদের আর খোঁজ পাচ্ছি না।”
সেই থেকে প্রতিক্ষালয়েই দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করার কারণে হাটা চলার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেন, শরীর ক্রমাগত অসুস্থ হতে থাকে। এবিষয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক নফসর আলি বলেন, কয়েকদিন ধরে ওই বৃদ্ধকে ওদলাবাড়ি ৩১ নাম্বার জাতীয় সড়কের পাশে প্রতিক্ষালয়ে মধ্যে থাকতে দেখছি। খাওয়া দাওয়া ঠিকঠাক না করায় খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে। ওনার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে, তাই সমস্ত দায়িত্ব আপাতত কাঁধে তুলে নিয়েছি আমরা। সেই সাথে সাথে চলছে উনার ছেলের খোঁজ ।”