সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

বা’ই’রে’র লোকে’র কা’ছে এ’খ’ন এই গ্রা’মে’র না’ম ম’য়ূ’রে’র গ্রা’ম!

বাইরের লোকের কাছে এখন এই গ্রামের নাম ময়ূরের গ্রাম!

মালদা: গ্রাম জুড়ে বিচরণ করছে একটি পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ ময়ূর। কখনো গ্রামের মধ্যে, আবার কখনো গ্রামের পাশে ঝোপ জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর তাকে নিয়েই উন্মাদনা গ্রাম জুড়ে। ময়ূর দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন বহু সাধারণ মানুষ। এমনকি ময়ূরের সৌজন্য গ্রামের নাম হয়ে গিয়েছে ময়ূরের গ্রাম। গ্রামের বাইরে থেকে আসা অনেকেরই কাছে ময়ূরের গ্রাম নামেই পরিচিতি এই গ্রামের। তবে পুরাতন মালদহ ও গাজোল ব্লকের সীমান্তবর্তী এই গ্রামের নাম বিনতারা। প্রত্যন্ত এই গ্রামের এখন খ্যাতি ময়ূরের জন্য। এই ময়ূর দেখার টানেই গ্রামে আসছেন বাইরে থেকে প্রচুর মানুষ।

গ্রামে যাওয়ার জন্য এলাকাবাসীর কাছে তারা জিজ্ঞাসা করেন ময়ূরের গ্রাম কোনটি?। আর সেই থেকেই “ময়ূরের গ্রাম” নামে প্রসিদ্ধি পাচ্ছে পুরাতন মালদা ব্লকের এক অখ্যাত গ্রাম বিনতারা। নারায়নপুর থেকে ১৯ কিলোমিটার আসলে পড়বে এই গ্রাম। গাজোল থেকে দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। এই গ্রামে আসলেই দেখা মিলবে এক পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ময়ূরের। এমনি সময় লোকালয় বা জঙ্গলে ঘুরে বেড়ালেও বর্ষাকালে সকাল এবং বিকেলে পেখম মেলে নাচতে দেখা যায় এই ময়ূরকে। গ্রামের প্রায় প্রতিটি মানুষই এই দৃশ্য দেখেছেন। সকলেই খুব ভালোবাসেন এই ময়ূরকে।

হঠাৎ এই গ্রামে ময়ূর দেখা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। গ্রামের বাসিন্দারা ময়ূরের রহস্য প্রকাশ্য নিয়ে আসেন। প্রায় আট বছর আগেকার কথা। গ্রামের এক আদিবাসী যুবক তালা মুর্মু কোথা থেকে দুটি ময়ূরের ডিম নিয়ে এসেছিলেন। তাদের বাড়িতে মুরগি ছিল। বাচ্চা ফোটানোর জন্য মুরগির ডিমের সাথে ময়ূরের দুটি ডিম রেখে দিয়েছিল। মুরগি তা দিয়ে সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায়। মুরগির বাচ্চার সাথে ময়ূরের ডিম ফুটেও দুটি বাচ্চা বেরিয়েছিল। যখন বাচ্চাগুলো খুব ছোট ছিল তখন মুরগির বাচ্চার সাথেই ঘুরে বেড়াতো। অন্যান্য বাচ্চার সাথে মা মুরগি ময়ূরের বাচ্চা দুটিকেও সাথে নিয়ে ঘুরতো।

প্রথমে গ্রামের লোক কিছুই বুঝতে পারেননি। কিন্তু বাচ্চাগুলো বড় হতেই ময়ূরের চেহারা ধারণ করতে শুরু করে। প্রথমে তালা মুর্মুর বাড়ির আশেপাশেই ময়ূর দুটি থাকতো। কিন্তু বড় হতেই তারা বাড়ি ছেড়ে গ্রামের ঝোপঝাড় জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে থাকে। ছয় মাস বয়সে একটি মারা যায়। বাকি একটি ময়ূর এখনো বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সকাল এবং বিকেল বেলা মানুষজনের বাড়ি ঘরের আশেপাশেই ঘুরে বেড়ায়। দুপুরবেলা বিশ্রাম নেয় কোনো ঝোপঝাড়ে। আর রাতের বেলা উঠে থাকে কোন গাছের মগ ডালে।

গ্রামের মানুষেরা খাবার দিলে যেমন খায়, তেমনি নিজেও মাঠে-ঘাটে সারা দিনে খুঁটে খুঁটে খাবার জোগাড় করে। বর্ষাকালে সকাল এবং বিকেলে মেঘ উঠলে পেখম মেলে নাচতে দেখা যায় ময়ূরটিকে। তবে প্রতিবছর এই সময় তার পেখমের পালকগুলো ঝরে যায়। আবার নতুন করে গজাতে শুরু করে। কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলো বিরাট বড় হয়ে যায়। তবে তাঁদের গ্রামের নাম বিনতারা হলেও বাইরের লোকের কাছে এখন এই গ্রামের নাম ময়ূরের গ্রাম।