জ্যোতিষশাস্ত্রে ক্ষতিকর গ্রহ বলতে শনি অন্যতম। সূর্য ও ছায়ার পুত্র শনি। শনির প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে মানুষকে কত কীই না করতে হয়। অনেকে নানা রকম গ্রহরত্ন পাথর ধারণ করে। কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তির উপরে শনিদেব সন্তুষ্ট হন সেক্ষেত্রে তাঁর জীবনে খুশির সীমা থাকে না। তাঁকে রুখতে পারে এমন কেউই নেই ৷
অন্যদিকে শনিদেবের রোষে জীবন একেবারে ছারখার হয়ে যায় ৷ মানুষের জীবন নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ে ৷ সারা দেশ রয়েছে প্রচুর শনিদেবতার মন্দির। কিন্তু আমাদের দেশে এমন এক শনির মন্দির রয়েছে যাকে ঘিরে রয়েছে নানান রহস্য।
মন্দিরটি হল শনি শিঙ্গণাপুর মন্দির। এখানে কালো পাথর রূপে শনিদেবতা পূজিত। প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে, এখানে শনিদেবতা নাকি কালো পাথর রূপে স্বয়ং প্রকট হয়েছিলেন। কলিযুগের সূচনা কালে রাখালেরা এখানে এই কালো পাথর দেখতে পেয়েছিলেন।
আরো পড়ুন: এলিয়েন কি আদৌ আ’ছে? এবার গবেষণার দা’য়ি’ত্ব নি’লো নাসা
শনি শিঙ্গণাপুরের রহস্যও রয়েছে অনেক। এটি বিশ্বের এমন একটি গ্রাম, যেখানে কোনো বাড়ির দরজা নেই। আবার এখানে কেউ তালা ব্যবহার করে না। এমনকি ব্যাঙ্কেও তালা লাগানো হয় না। এখানে কখনও কোনো বাড়িতে চুরিও হয়নি। এখানকার মানুষ বিশ্বাস করেন, এখানে যদি কেউ চুরি করে তাহলে স্বয়ং শনিদেবতা তাঁকে শাস্তি দেন। তাই শিঙ্গণাপুরে কেউ চুরি করার সাহস দেখায় না।
এখানে খোলা আকাশের নীচে একটি বেদীর ওপর একটি কালো পাথর রূপে শনিদেবতার আরাধনা করা হয়। প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী শনির প্রতীক রূপী এই পাথরটি যখন রাখাল খুঁজে পায়, তখন শনি তাঁকে স্বপ্নে দর্শন দেন।
শনিদেবতাই তাঁকে খোলা আকাশের নীচে পাথরটিকে রাখার নির্দেশ দেন কারণ সমগ্র আকাশই তাঁর ছাদ এবং পুজোর সমস্ত নিয়মও জানান। এখানে শনিকে তেল দিয়ে অভিষেক করা হয়। যে ব্যক্তি এখানে আসেন, তাঁদের জীবনের সমস্ত কষ্ট দূর হয়ে যায় বলেও বিশ্বাস রয়েছে।
শিঙ্গণাপুর কোথায় তা জানেন কি? মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার নেবাসা তালুকার একটি গ্রাম হল শিঙ্গণাপুর। এখানেই স্বয়ম্ভূ শনি মন্দির অবস্থিত। ঔরঙ্গাবাদ শিঙ্গণাপুরের নিকটবর্তী বিমানবন্দর। তাই বিমান পথে যেতে হলে শিঙ্গণাপুর থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঔরঙ্গাবাদ বিমানবন্দরে নামতে হবে।
তারপর সড়ক পথে বাসে করে শিঙ্গণাপুরে যেতে হবে। এখানকার বাস পরিষেবা বেশ ভালো। আর ট্রেন পথে এলে রাহুরী স্টেশনে নামতে হয়, সেখান থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শিঙ্গণাপুর গ্রাম। তাই সেখানেও সড়ক পথই ভরসা।