দেখতে দেখতে বাঙালির বিশেষ উৎসব দুর্গাপূজো, বাঙালির ঘরের দোরগোড়ায় চলে এসেছে। আর কিছুদিন, তারপরেই শুরু হয়ে যাবে দেবীপক্ষের সূচনা। পিতৃপক্ষ শেষ হয়ে শুরু হবে দেবীপক্ষ। চলতি মাসের ২০ তারিখে শুরু হবে পিতৃপক্ষ, এই সময় পূর্বপুরুষদের স্মরণ করা হয় এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনার জন্য শ্রাদ্ধ করা হয়ে থাকে।
অনেকেই পিতৃপুরুষকে তৃপ্তি লাভ করার জন্য বিভিন্ন তীর্থস্থান হরিদ্বার, গয়ায় গিয়ে পিন্ডদান করেন। এই পিতৃপক্ষ সময়কাল হল ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা থেকে আমাবস্যা পর্যন্ত, আজকেই শেষ হতে চলেছে গণেশ চতুর্দশি এবং শুরু হবে আগামী কাল থেকে পিতৃপক্ষ।
এই পিতৃপক্ষে শাস্ত্র অনুযায়ী কিছু কাজ নিষিদ্ধ বলে মনে করা। শাস্ত্র মতে, এই পিতৃপক্ষের সময় পৃথিবীতে নেমে আসে সমস্ত পূর্বপুরুষেরা এবং এই সময়ে যে যার পরিবারের পাশাপাশি থাকেন। এই সময়ে সেই রকম কোন কাজ করা ঠিক নয় যেগুলোর কারণে পূর্বপুরুষেরা রাগ হতে পারেন।
জ্যোতিষ আচার্য অরবিন্দ মিশ্র পিতৃপক্ষের নিষিদ্ধ কিছু কাজ কর্মের বিষয়ে জানান এবং তার মতে এই সময়ে সকলের নিরামিষ খাবার খাওয়া দরকার, আমিষ এবং নেশা জাতীয় জিনিস না খাওয়াটাই ভালো। পিতৃপক্ষ চলাকালীন যারা শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান পালন করবেন, তাদের ক্ষেত্রে চুল এবং নখ কাটা যাবে না এবং তারা ব্রহ্মচর্য প্রথম জীবন পালন করবেন।
শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানটি করতে হবে সকালে, কারণ সূর্য অস্ত চলে যাওয়ার পর শ্রাদ্ধ করাটা অশুভ বলে মনে করা হয়। এইসময় ছোলা, জিরে, সরষে শাক, লাউ এই খাবারগুলোকে এড়িয়ে চলা উচিত এবং কোন পশু পাখিকে কোন রকম ভাবে কষ্ট দেওয়া উচিত নয়। যদি এই পিতৃপক্ষের সময়ে কোন পশু পাখি আপনার গৃহে প্রবেশ করে, তবে অবশ্যই তাকে কিছু খাদ্যদ্রব্য খেতে দিতে হবে, এটাই মনে করতে হবে যে আপনার পূর্বপুরুষেরা কোন রূপে এসেছে।
এই সময়টিতে কলা পাতায় খাওয়া কিংবা ব্রাহ্মণদের যদি কলাপাতায় আহার করানো হয় তবে তা ভীষণ ফলদায়ক। পিতৃপক্ষের সময়ে গৃহের যেকোনো শুভ কাজের জিনিসপত্র না কেনাই ভালো, এই সময় যদি নতুন কাপড় চোপড় কেনা হয় তাহলে সেটা অধিক ক্ষেত্রে অশুভ বলেই মনে করা হয়।