বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে বহু বেকার যুবক-যুবতী ঝুঁকছেন যাত্রা দলে অভিনয়ের দিকে। তবে এটা কী বিনোদনের প্রতি ভালোবাসা নাকি শুধুমাত্র কর্মসংস্থানের জন্য? বাগবাজারের পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা অ্যাকাডেমিতে এক প্রশিক্ষণ-কর্মশালা চলেছে, তাতে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেছিলেন শিক্ষিত-শহুরে ছেলেমেয়েরা।
তারা যাত্রায় অভিনয় করে উপার্জন করতে পারবেন শো-পিছু ৩ হাজার টাকা। শিক্ষিত শহুরেদের মানুষদের কাছে যাত্রা নাক-সিঁটকানোর বস্তু, সেখানে এবারের কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পডুয়াদের অংশগ্রহণ অবাক করেছে কর্তৃপক্ষ মহলকে।
একসময় যাত্রা দলে অভিনয়কারীদের ঘর পর্যন্ত ভাড়া দেওয়া হতো না। এখন সেই চিত্রটা কতটা পাল্টেছে। ওই প্রসঙ্গে যাত্রাভিনেতা ও প্রশিক্ষক পুষ্পেন্দু মুখোপাধ্য়ায় বলেছেন, “আমাদের তো জায়গা ছাড়তে হবে নতুনদের।
আরো পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রচুর ক্রস ভোটিং! বি’রো’ধী শিবিরের বহু ভোট পেয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু
সেই জন্যই এই কর্মশালায় আমরা ওঁদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি এই ভাবে। যাত্রা করলেও পয়সাকড়ি উপার্জন করা যায়। শিল্পী হিসেবে যাত্রাকে সকলে ভালবাসেন। একটা সময় ছিল যখন যাত্রার শিল্পীদের বাড়িভাড়া দেওয়া হত না। কিন্তু এখন ডেকে-ডেকে বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়।”
যাত্রায় প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন তাদের মধ্যে গবেষক সোমাঞ্জন মণ্ডল বলেছেন, “অনেকেই মনে করেন যাত্রা করে ফাতরা লোকে। কিন্তু আমার একটা আগ্রহ ছিলই। বিষয়টাকে কাছ থেকে জানতে চেয়েছি, বুঝতে চেয়েছি।
এখানে এসে আমার খুব উপকারও হয়েছে। অনেক নতুন-নতুন ছেলেমেয়ে যোগদান করেছেন। তাঁরা যাত্রাকে পেশা হিসেবে নিতে চাইছেন। এটা কিন্তু বেশ ভাল লক্ষণ।”
বাগবাজারে পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা অ্যাকাডেমির কার্যালয়ে ১৫দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হবে। এখানে যাত্রার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করলে ১০০ জন তরুন তরুন যাত্রার প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেন। ১০০ জনের মধ্যে থেকে ৪৩ জন তরুণ-তরুণী যোগদান করেছেন এই কর্মশালায়।
এই ৪৩ জনের মধ্যে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, গবেষক, এমফিল। এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা অ্যাকাডেমির সচিব তপনকুমার সরকার বলেছেন, “আমরা যখন এক কর্মশালার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম, ক্যাপশনে লেখা হয়েছিল, ‘নবীন প্রতিভার খোঁজে যাত্রা’। আমরা চাইছিলাম শিক্ষিত ও লেখাপড়া জানা ছেলেমেয়েরাই যাত্রায় আসুক।”