ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে বিভিন্ন পশুপাখিদের দেবতা রুপে পুজো করার রীতি আছে তা আমরা সকলেই জানি। যেমন সাপ যেহেতু মহাদেবের প্রতীক, তাই তার পুজো হয়। আবার হাতিকে গণেশ ঠাকুরের প্রতীক হিসেবে পুজো করা হয়। কিন্তু ইঁদুরকে ভগবান রুপে পুজো করার চল আছে এমন কথা শুনেছেন কখনও?
ভাবতেই পারেন এ ঘটনা অসম্ভব। কিন্তু না, ইঁদুরকে পুজো করা হয় ভারতের রাজস্থানের করনি মাতার মন্দিরে। এই মন্দিরটি অবস্থিত রাজস্থানের বিকানের শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে। এই মন্দিরটিকে ঘিরে রয়েছে বহু অজানা গল্প গাথা। করনি মাতা হল দেবী দুর্গার রূপ। এমনকি এই মন্দিরে ইঁদুরদের থালা সাজিয়ে ভোগও নিবেদন করা হয়।
এই মন্দিরের ইঁদুর পুজো নিয়ে বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন মত রয়েছে। কিন্তু কোনটা যে আদতে সত্যি, তা বলা মুসকিল। এখানকার অধিকাংশ লোকেরা মনে করেন, এই ইঁদুর গুলি হল করনি মাতার সন্তান। একবার নাকি করনি মাতার ছেলে লক্ষণ পুকুরে স্নান করতে গিয়ে ডুবে মারা যায়। করনি মাতা যমরাজের কাছে নিজের ছেলে ফেরত চাইলে যমরাজ তার সমস্ত সন্তানকে ইঁদুর বানিয়ে দেন। তারপর থেকে সেই মন্দিরে ইঁদুরকে ভগবান হিসেবেই পুজো করা হয়ে থাকে।
আবার অন্য একদল লোকের মতে, বেশ কিছু বছর আগে অনেক সেনা প্রাণভয়ে এই মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের প্রাণ বাঁচানোর উদ্দেশ্যে করনি মাতা তাদের ইঁদুরে পরিণত করে। তখন থেকেই এই মন্দিরে শুরু হয় বহু ইঁদুরের আনাগোনা।
এই মন্দিরের নিয়ম অনুযায়ী রোজ একটি থালায় দুধ সাজিয়ে ইঁদুর গুলির সামনে রেখে দেওয়া হয়। সাধারণত ইঁদুরে মুখ দেওয়া কোনো খাবার মানুষ খেতে পারেনা বলেই মনে করা হয়। কিন্তু এখানে বহু দর্শনার্থী পুণ্যের আশায় সেই ইঁদুরে খাওয়া দুধ আঙ্গুলে করে মুখে প্রসাদের মত গ্রহণ করেন।
এই মন্দিরে আসলেই দেখতে পাবেন হাজার হাজার কালো সাদা ইঁদুর চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর একটা কথা, যদি এই মন্দিরে আসার পর কোনো সাদা ইঁদুর আপনি দেখতে পান তাহলে আপনার জীবনে ঠিক ভালো কিছু ঘটবেই। আর কেউ যদি ইঁদুরে ভয় পান তাহলে এই স্থানে তার না আসাই ভালো।