সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

নৃসিংহ অ’ব’তা’র কেন ধারণ করেছিলেন ভগবান বিষ্ণু, জানুন পৌরাণিক কা’হি’নী

ভগবান বিষ্ণুর অবতাতের কথা আমরা সকলেই জানি। বিষ্ণুর এই বিভিন্ন অবতার আমাদের জীবনে বিভিন্ন শিক্ষা দিয়ে গেছে। প্রত্যেক অবতারের কোনো-না-কোনো মাহাত্ম্য আছে এই পৃথিবীতে। এই সমস্ত অবতার এর মধ্যে অন্যতম অবতার হলেও নরসিংহ অবতার। চলুন আজকে জেনে নেওয়া যাক কেন এই অদ্ভুত বেশে ধরা দিয়েছিলেন ভগবান স্বয়ং? আমরা সকলেই জানি হিরণ্যকশিপু নামে এক অত্যাচারী রাজাকে হত্যা করার জন্য এই বেশে আসতে হয়েছিল ভগবান বিষ্ণুকে। ভক্ত প্রহ্লাদের কথাও আমাদের অজানা নয়।

একদা এক প্রভাবশালী রাজা ছিলেন হিরণ্যকশিপু। তার দাদার মৃত্যু হয়েছিল বিষ্ণুর হাতে। স্বাভাবিকভাবেই দাদার মৃত্যুর পর থেকে প্রবলভাবে বিষ্ণু বিদ্বেষী হয়ে ওঠেন হিরণ্যকশিপু। শুধু তাই নয় তিনি ঠিক করেন যে তিনি নিজের হাতে বিষ্ণুকে হত্যা করবেন। কিন্তু হত্যা করবেন বললেই তো হলো না। তার জন্য চাই প্রচুর পরিমাণে ক্ষমতা। এই ক্ষমতার তাকে কে এনে দিতে পারে? হ্যাঁ এই ক্ষমতা তাকে দিতে পারেন স্বয়ং প্রজাপতি ব্রহ্মা।

অতঃপর হিরণ্যকশিপু ব্রহ্মার ধ্যান শুরু করলেন। একদিন হিরণ্যকশিপুর ওপর সন্তুষ্ট হয়ে ব্রহ্মা তাঁকে বর দিলেন, প্রজাপতি সৃষ্ঠ কোন জীবের হাতে হিরণ্যকশিপুর হত্যা হবে না। স্বাভাবিকভাবেই ব্রম্ভা সৃষ্ট এই পৃথিবীতে কেই বা আছে যে হিরণ্যকশিপুকে হত্যা করতে পারবে? ঘরে বাইরে, জলে-স্থলে কোথাও মৃত্যু হবে না এমন বর দিলেন হিরণ্যকশিপুকে স্বয়ং ব্রহ্মা।

এরপর হিরণ্যকশিপু ভীষণভাবে অত্যাচারী হয়ে উঠলেন। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ। কিন্তু ওই যে, তোমাকে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে। এখানে হল কিছুটা সেই গল্প। হিরণ্যকশিপুর ছেলে প্রহ্লাদ হলো বিষ্ণুর পরম ভক্ত। প্রহ্লাদ যখন বিষ্ণুর নাম কীর্তন করত, তখন ভীষণ ভাবে তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে যেতেন হিরণ্যকশিপু। বিষ্ণুকে নিয়ে পিতা পুত্রের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলতে থাকল বহুদিন।

এইভাবে চলতে চলতে একদিন প্রহ্লাদের কাছে হিরণ্যকশিপু প্রমান চান বিষ্ণুর অস্তিত্ব সম্পর্কে। ভক্ত প্রহ্লাদকে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, কোথায় বিষ্ণু আছে? একটি থাম দেখিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে কী বিষ্ণু অবস্থান করছে? প্রহ্লাদ বলে, বিষ্ণু সর্বত্র বিরাজমান। কথা শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে খামের ওপর আঘাত করে হিরণ্যকশিপু। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে নরসিংহ অবতার নিয়ে আবির্ভূত হন স্বয়ং বিষ্ণু।

শুধু আবির্ভূত হয়ে নিজেকে প্রমাণ করেন তা নয়, নিজের থাইয়ের উপর হিরণ্যকশিপুকে রেখে হত্যা করেন তিনি। নরসিংহ এমন একটি প্রাণী যে ব্রম্ভা সৃষ্ট কোন প্রাণীর মধ্যে পড়ে না। জলে অথবা স্থলে নয়,নিজের থাই-এর উপর রেখে হিরণ্যকশিপু কে হত্যা করেন স্বয়ং রম্ভা। এইভাবে অত্যাচারী রাজার হাত থেকে সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করেন ব্রহ্মা।