সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

জয় জয় বজরংবলী, হনুমান জয়ন্তীতে কৃ’পা লা’ভ করুন এভাবে

হিন্দু ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উত্‍সব হল হনুমান জয়ন্তী। চৈত্র শুক্লার পূর্ণিমা তিথিতে হনুমান জয়ন্তী পালিত হয়। শক্তি ও ক্ষমতার প্রতীক হলেন হনুমান। এই বছর ১৬ এপ্রিল শনিবার দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে এই উৎসব। এদিন ভক্তেরা সিঁদুর, লাল কাপড়, হলুদ, লাল গোলাপ দিয়ে হনুমানের পুজো করেন। হনুমানের অন্যতম প্রিয় খাদ্য লাড্ড‌ু, কলা, হালুয়া ভোগ হিসেবে বিতরণ করা হয় এই উৎসবে।

শাস্ত্র অনুসারে শনিবার বজরংবলীর প্রিয় দিন। শনিবার পুণ্য তিথিতে ভক্তি ভরে পবনপুত্র হনুমানের পুজো করলে এক সঙ্গে বহু সমস্যার সমাধান হতে পারে। পবনপুত্র হনুমানকে সঙ্কটমোচনকারী দেবতা রূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাঁর পুজো করলে অন্য দেবদেবীর পুজো করার প্রয়োজন পড়েনা ৷ মনে করা হয়, তিনিই সকল কামনা ও বাসনা পূরণ করেন ৷

পবনপুত্রের আশীর্বাদে পাহাড় সমান বিপদও টলানো সম্ভব। হনুমানের পুজোয় দুর্বল জীবনে পজিটিভ শক্তি ফিরে আসে৷ ভক্তি নিষ্ঠা ভরে, শুদ্ধ বস্ত্রে হনুমান চালিশা পাঠ করলে তাবড় তাবড় বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শ্রীরামচন্দ্রের পরম ভক্ত বজরঙ্গবলি।

তার মহাশক্তিতে জীবনে ফিরে আসে আনন্দ, জীবন হয়ে ওঠে সুন্দর৷ হনুমান প্রভু রামের প্রতি তাঁর আনুগত্য দিয়ে মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আদায় করে নেন৷ মানুষের অন্ধকার দিকের বিনাশ ঘটিয়ে সুমতি প্রদান করে থাকেন পবনপুত্র হনুমান৷

আরো পড়ুন: বি’য়ে হয়েছে রণবীর-আলিয়ার, দুজনের মি’লি’ত সম্পত্তির পরিমাণ দেখলে অ’বা’ক হয়ে যাবেন আপনি

পুরাণ অনুযায়ী হনুমান হলেন রুদ্র অবতার। বলা হয়, একবার দশানন রাবণ কৈলাশের দ্বাররক্ষী নন্দীকে ব্যঙ্গ করেন। ক্ষিপ্ত হয়ে নন্দী রাবণকে অভিশাপ দেন যে রাবণ আর তাঁর রাক্ষস কূল ধ্বংস হবে নর আর বানরের হাতে।

রাক্ষস বাহিনীর অত্যাচার থেকে ধরিত্রীকে মুক্ত করতে এবং রামের সেবা ও রাম নাম প্রচারের উদ্দেশ্যেই রুদ্র অবতার হনুমানের আবির্ভাব হয়। তাঁর বাবার নাম কেশরী, আর মা অঞ্জনা। হনুমানের পালক পিতা হলেন পবন দেব।

ছোটবেলা থেকেই হনুমান ছিলেন অত্যন্ত চঞ্চল। পুরান অনুসারে একবার তিনি সূর্যকে ফল ভেবে খেয়ে ফেললে দেবরাজ ইন্দ্র শিশু হনুমানের ওপর রেগে গিয়ে বজ্র নিক্ষেপ করে সূর্যকে উদ্ধার করেন।

বজ্রের আঘাতে হনুমান অচেতন হলে, তাঁর পালক পিতা পবন ক্র‌ুদ্ধ হয়ে সমস্ত রকম বায়ু রোধ করলে এক মহাবিনাশের উপক্রম হয়। এরপর ব্রহ্মা ও অনান্য দেবগণ হনুমানকে সুস্থ করে নানা আশীর্বাদ প্রদান করেন। পুরাণ অনুযায়ী হনুমান অমর, তাঁর মৃত্যু নেই।

শ্রীরামচন্দ্রের একনিষ্ঠ সেবক ছিলেন হনুমান। সীতার অপহরণের পর হনুমানের উদ্যোগে রামচন্দ্রের সঙ্গে বানর রাজ বালির ভাই সুগ্রীবের বন্ধুত্ব হয়। হনুমানই প্রথম অশোক বনে অপহৃতা সীতার সংবাদ আনেন। রাম-রাবণের যুদ্ধে হনুমান প্রচুর বীরত্বের পরিচয় দেন। যুদ্ধে আহত লক্ষণের প্রাণ বাঁচাতে তিনি গন্ধমাদন পর্বত তুলে আনেন। এ ভাবে হনুমান ভগবান রামচন্দ্রের সেবা করেন।

যেহেতু এই বছর শনিবার হনুমান জয়ন্তী উৎসব পালিত হবে তাই তা বিশেষ উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হচ্ছে। তার উপর এদিন শনি মকর রাশিতে অবস্থান করছে। ১৯৯১ সালের ৩০ এপ্রিল হনুমান জয়ন্তী শনিবার পড়েছিল এবং সেদিনও শনি মকর রাশিতে অবস্থান করছিল। ৩১ বছর পর হনুমান জয়ন্তীতে এই দুর্লভ যোগ পড়েছে।

আরো পড়ুন: রণবীর-আলিয়ার বি’য়ে’র আসর এবার কলকাতায়! দা’য়ি’ত্ব পা’ল’ন করলেন পরিচালক শিবপ্রসাদ

শ্রীহনুমানের জন্মের নানা কাহিনী বর্ণিত আছে শাস্ত্রে। শ্রীহনুমান হল বানররাজ কেশরী এবং অঞ্জনার পুত্র। বিশ্বামিত্রের অভিশাপে অঞ্জনার গর্ভে হনুমানের জন্ম হয়। এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে অঞ্জনা মহাদেবের পুজো করেন। আর মহাদেবের আশীর্বাদে হনুমানের মধ্যে স্বয়ং মহাদেবের অংশ রয়েছে বলে মনে করা হয়।

অন্য একটি গল্প অনুসারে রাজা দশরথ সন্তান লাভের জন্য পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করেন। সেই যজ্ঞ থেকে উঠে আসা পায়েস তিনি তাঁর রানিদের খেতে দেন। পবন দেব একটি ঘুড়ি উড়িয়ে সেই পায়েসের কিছুটা অংশ আহরণ করেন। সেই পায়েসটুকু তিনি অঞ্জনাকে খেতে দেন। তারপরেই অঞ্জনার ক্রোড়ে হনুমানের জন্ম হয়। এই কারণ হনুমানকে পবনপুত্রও বলা হয়ে থাকে।