শ্রাবণ মাসে পুরান পাঠ করা অত্যন্ত শুভ ফলদায়ক বলে ধরা হয়। শ্রাবণ মাসে শিব পুরাণ পাঠ এবং সোনার মাধ্যমে মানুষের সমস্ত দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যায়। এই শিব পুরাণে (Sawan Shiv Puran)-এ শিবের প্রণব ও পঞ্চাক্ষর মন্ত্রের উৎপত্তির উল্লেখ পাওয়া যায়, তার পাশাপাশি প্রণব অর্থাৎ ওম বা ওংকার এবং পঞ্চাক্ষর মন্ত্র অর্থৎ নমঃ শিবায়ের কতবার জপ করলে কী সুফল পাওয়া যায়, সেটা এই আর্টিকেলে আলোচনা করব।
প্রণব মন্ত্রের উৎপত্তি- শিব পুরান থেকে জানা যায় একদা শিব ব্রহ্মা ও বিষ্ণুকে নিজের প্রণব মন্ত্রের উৎপত্তির রহস্য জানাতে গিয়ে দেবাদিদেব মহাদেব বলেছিলেন পঞ্চকৃত্য অর্থাৎ সৃষ্টি, পালন, সংহার, তিরোভাব ও অনুগ্রহ অর্থাৎ মোক্ষ এই পাঁচ কৃত্যের ভার বহন করার জন্য তাঁর পাঁচটি মুখ রয়েছে।
চারটি মুখ চারদিকে অবস্থিত এবং পঞ্চমুখটি মধ্যস্থলে অবস্থিত। এই পাঁচটি মুখের মধ্যে সৃষ্টি ও পালনের দায়িত্ব ব্রহ্মা ও বিষ্ণর উপর দিয়েছিলেন। তাঁর বিভূতি স্বরূপ রুদ্র ও মহেশ্বর সংহার ও তিরোভাবের দায়িত্ব পালন করে কিন্তু মোক্ষ তিনি প্রদান করেন। ঠিক এরপর মহাদেব স্বরূপভূত মন্ত্রের উপদেশ দেন এবং এটি ওংকার নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে।
আরো পড়ুন: সোনু সুদ কি ত’বে বিজেপিতে যাচ্ছেন? শী’র্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈ’ঠ’ক অভিনেতার
ওংকারের উৎপত্তি- মহাদেবের কথা থেকে জানা যায় তাঁর উত্তরাবর্তী মুখ দিয়ে অকার, পশ্চিম মুখ দিয়ে উকার, দক্ষিণ মুখ দিয়ে মকার, পূর্ববর্তী মুখ থেকে বিন্দু ও মধ্যবর্ত মুখ থেকে নাদ প্রকট হয়। এ ভাবে এই পাঁচটি অবয়ব থেকে সৃষ্টি হয় ওংকারের।
আবার এই পাঁচ অবয়বকে একত্রিত করে প্রণব ‘ওম’ নামক অক্ষর উৎপন্ন হয়। জগতে উৎপন্ন সমস্ত স্ত্রী-পুরুষ এই প্রণব মন্ত্রের মধ্যে ব্যাপ্ত বলে মনে করা হয়। এর থেকেই উৎপত্তি হয় পঞ্চাক্ষর মন্ত্র ওম নমঃ শিবায়ের।
প্রণব ও অন্যান্য মন্ত্র জপের উপকারিতা-
১) আর্দ্রা নক্ষত্রে চতুর্দশী তিথিতে এই প্রণব মন্ত্র জপ করলে অক্ষয় ফল প্রদান করে।
২) জপ করার সময় প্রণব মন্ত্র অর্থাৎ ওম-এর উচ্চারণ মনকে বিশুদ্ধ করে তোলে।কেউ কেউ আবার নাদ ও বিন্দু যুক্ত ওংকারকে সমান প্রণব বলে থাকেন। প্রতিদিন ১০ হাজার বার পঞ্চাক্ষর মন্ত্র জপ করলে শিবপদ লাভ করা যায়।
দৈনন্দিন কাজের নিয়ম- প্রতিদিন কি কি কাজ করা উচিত সেটাও বর্ণনা করে দেয়া আছে শিব পুরানে। প্রতিদিন সকালে দৈনিক শাস্ত্র কর্ম, মধ্যাহ্ন সকাম কর্ম ও সন্ধ্যাকালে শান্তি কর্মের জন্য পুজো করা উচিত।