সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

গুড়ের নাম কে’ন রা’খা হয়েছে “নলেন”?

শীতকাল মানেই বাঙালির পাতে নলেন গুড় থাকবে না তা হয়! কিন্তু খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি হওয়ার পদ্ধতি অনেক মানুষেরই অজানা। খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড়ের নাম নলেন গুড় হল কীভাবে তা জানতে গিয়ে উঠে এসেছে এক অজানা তথ্য। দেখা গেছে এই শব্দের সাথে যোগ রয়েছে দ্রাবিড় সভ্যতার।

প্রাচীন দক্ষিণ ভারতে এর ব্যবহার ছিল বলে মনে করা হয়। কারণ বাংলা-দ্রাবিড় অভিধানে ‘ণরকু’ শব্দের অর্থ হল কাটা বা ছেদন করা। অন্যদিকে মাননীয় হরিনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ অভিধান মতে নরুন বা নরশনি মানেও কাটা বা ছেদন করা। এই নরুন হল গ্রামের নাপিতের ক্ষৌর অস্ত্র। খেজুর গাছ থেকে রস বের করতে গুড় প্রস্তুতকারীরা প্রথমে দা অর্থাৎ কাটারি দিয়ে চেঁছে দেয়, তারপর নরুনে ফুটো করে সেখান থেকে একটা বাঁশের ছিলা লাগিয়ে দেওয়া হয় হাঁড়ি পর্যন্ত, এইভাবেই নল দিয়ে রস চুঁইয়ে হাঁড়িতে পড়ে। এর থেকে নলেন গুড় নামের উদ্ভব হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

শব্দের অর্থ তো বিভিন্ন হতেই পারে। সাহিত্য থেকে বিজ্ঞান সর্বত্র নলেন গুড়ের স্তুতি শুনতে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানের মতে, নলেন গুড় উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবার, অথচ অ্যান্টি-ফ্যাটের উৎস এটি। বিকালের পর বিভিন্ন খেজুর গাছে গা চেঁচে নরুন দিয়ে ফুটো করে ফাঁকা হাড়িগুলো ঝুলিয়ে দিয়ে আসা হয় আর ভরতি হাড়িগুলো নিয়ে আসা হয়। পরেরদিন ভোরে সেই রস নামিয়ে এনে বিভিন্ন হাড়ি থেকে ঢালা সমস্ত রস একত্র করে বড়ো পাত্রে ফোটানো হয়। ফুটিয়ে ফুটিয়ে সেই রস থেকে গুড় প্রস্তুত করা হয়। আবার এই গুড়কে নিদিষ্ট পদ্ধতিতে ঠান্ডা করে পাটালিও তৈরি করা হয়। নলেনগুড়ের এই দুই ধরণই খেতে একেবারে অনবদ্য – ১) ঝোলাগুড় ও ২) পাটালি।